বিদেশিদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করার জন্য আপনাকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি: রিজভী

অনলাইন ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘চলতি নভেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সারাদেশে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? আপনার সরকার এসব দিকে নজর না দিয়ে শেখ হাসিনার মতো গোপনে চুক্তি করছে। বিদেশিদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করা জন্য তো আপনাকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি।’

গতকাল রোববার (১৬ নভেম্বর) পটুয়াখালীর এক অসচ্ছল পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘মানুষ বাঁচতে চায়, দুই বেলা খাবারের নিশ্চয়তা চায়। আপনার সেদিকে নজর নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই। কৃষকেরা মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। কেউ চাল কিনলে আলু কিনতে পারছে না। নিম্ন আয়ের মানুষ ও কৃষককে বাঁচিয়ে জনবান্ধব সরকারের পরিচয় দিন।’

দেশের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল দেখছি। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করবে সরকার। কিন্তু চট্রগ্রাম বন্দর নাকি বিদেশি অপারেটরদের হাতে দেওয়া হবে। দেশের নদী বন্দর ও সমুদ্র বন্দর যদি ক্রমান্বয়ে বিদেশিদের হাতে যেতে থাকে তাহলে নিরাপত্তার প্রশ্ন। ভারতের আদানীর সাথে বিদ্যুৎ নিয়ে যে চুক্তি করেছে সেটি দেশের স্বার্থে নয়, শেখ হাসিনার নিজের স্বার্থে করেছিল। ভারত তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখবে তাই সে চুক্তি করেছিলো। যা পৃথিবীর কোথাও নেই। ড. ইউনুস সাহেবকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। শেখ হাসিনা যা করে গেছে, সে কাজ করা যাবে না।

এসময় তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পিআর পদ্ধতি ও গণভোটের আইনি ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে মিলিত হয়ে নির্বাচন করুক, সেটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আইনগত ভিত্তি ছাড়া যেকোনো সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে প্রশ্নের জন্ম দেবে। কোনো রাজনৈতিক দল যদি কেবল নিজেদের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা বা অহমিকাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তা টেকসই বা গ্রহণযোগ্য হবে না। সবাই একসঙ্গে আলোচনা করেছেন ঠিকই, কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের আইনি ভিত্তি কতটুকু দৃঢ় এটাই এখন মূল প্রশ্ন। বিভিন্ন জায়গা থেকে আজ এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

জুলাই সনদ নিয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদে ৮৪ টি ধারা আছে কিন্তু কয়জন মানুষ জানে সেগুলো কী? মানুষ এখনই জানতে চায় তার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, খাদ্যের নিশ্চয়তা কীভাবে মিলবে। তাই মূল মনোযোগ হওয়া উচিত মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে, স্থিতিশীল বাজার গঠনে এবং কৃষক ও সাধারণ মানুষের জীবিকার সুরক্ষায়। দেশের মানুষ আজ নানা সংকটে কষ্ট পাচ্ছে। একসপ্তাহ মানুষ না খেয়ে থাকতে পাড়ে এটা ভাবতেই কষ্ট হয়। এসব সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের দায়িত্ব আগেই নেওয়া উচিত ছিল। ডেংগু ও চিকুনগুনিয়া এখন মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে এটিও রোধে দ্রæত পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল সরকারের।

Related Articles

Back to top button