যে সাক্ষ্য-প্রমাণ, তাতে সাজা দেওয়ার বিকল্প নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

অনলাইন ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম আসাদুজ্জামান।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি বলেছেন, মামলার অভিযুক্তরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। একজন প্রধানমন্ত্রী, একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, উনারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেটা জোর করে হোক, নির্বাচিত হয়ে হোক, যেভাবেই হোক। তাহলে কি এমন ঘটনা ঘটল যে উনাকে পালিয়ে যেতে হলো? কেন তিনি বা তারা দেশ ছেড়ে গেলেন? উনারা খুন করেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। এই খুনের পর যখন জনগণ জেগে উঠেছে, তখন এই মামলার অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, এই পালানোকে সাধারণ পালানো হিসেবে দেখলে হবে না। শুধু তাই না, উনারা এই বিচার সম্পর্কে জানেন, বিচার পর্যবেক্ষণ করছেন। এই বিচারের বিষয়ে কথা বলেছেন। এই বিচারকে প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন রকম ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশনা) দিচ্ছেন। ফলে এটা বলার সুযোগ নেই অভিযুক্তরা নিরপরাধ।
বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ এ যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, একটা দেশে ৩৬ দিনে ১৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করানো হয়েছে শুধু ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার জন্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি যে সাক্ষ্য-প্রমাণ আপনাদের সামনে এসেছে, এসব সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্বের যে কোনো দেশের যে কোনো আদালতে উপস্থাপন করলে ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই আসামিদের সাজা দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ থাকবে না আদালতের সামনে। তারপরও এই বিচার যদি আমরা করতে না পারি, তাহলে আমরা বাংলাদেশে মানুষ হিসেবে ভীরু কাপুরুষের উপমা হয়ে রয়ে যাব।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এ রকম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ, পুরো প্রজন্মকে হত্যা করে ফেলার চেষ্টা, ৩৫ হাজার মানুষকে আহত করা, অঙ্গহানি করা, এরপরও সামান্যতম অনুশোচনা নেই আসামিদের। রাষ্ট্রের মধ্যে শেখ হাসিনা একটা সিভিল ওয়ার (গৃহযুদ্ধ) লাগানোর চেষ্টা করেছেন। সেনাবাহিনী ও জনগণকে মুখোমুখী দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও জনগণ সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। সুতরাং সর্বোচ্চ শাস্তিটা তার অবশ্যই প্রাপ্য।




