সুইসকন্ট্যাক্টের উদ্যোগ

কৃষিপণ্য রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জাতীয় সংলাপ
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের একত্রে কাজের গুরুত্ব তুলে ধরে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘Towards Export Readiness: Partnerships and Collaborations’ শীর্ষক আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সুইসকন্ট্যাক্ট, যা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কৃষি ও রপ্তানি খাতে কাজ করে আসছে।
কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়, মান নিয়ন্ত্রণ এবং অংশীদরত্ব জোরদার করে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যকে বিশ্ববাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করা যায়, তা নিয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়।
সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘কৃষিপণ্য রপ্তানি সক্ষমতা গড়ে তোলা কেবল একটি প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি জাতীয় লক্ষ্য। বাংলাদেশ প্রতিবছর ১.৫ কোটিরও বেশি মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন করে, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঘাটতির কারণে এর অল্প অংশই বিদেশে পৌঁছায়। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা যদি বৈশ্বিক মানের সঙ্গে কৃষি উৎপাদন পদ্ধতিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পারি, তাহলে এই খাতের প্রকৃত সম্ভাবনাকে উন্মোচিত করা সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক SPS মানদণ্ডে সামঞ্জস্যতা অর্জন আমাদের রপ্তানি প্রতিযোগিতা বাড়ানোর মূল চাবিকাঠি। সুইসকন্টাক্টের উদ্যোগ সরকারি সংস্থা, রপ্তানিকারক ও উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের পথ তৈরি করছে, যার ফলে নীতিমালা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে “Unlocking Agri-Export Competitiveness through SPS Capacity Strengthening” শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিএফভিএপিইএ, এসিআই এগ্রিবিজনেস, ইপিবি ও এসজিএস বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। তারা কৃষিপণ্যের এসপিএস ঘাটতি, সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্যানেল সদস্যরা বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করতে মূল চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলো তুলে ধরেন। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক ঝুঁকি যেমন ক্ষতিকর পোকামাকড়ের ঝুঁকি, কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ; একই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থায় কোল্ড চেইন ও পরিবহন ব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করা হয়।
তারা জোর দেন যে আন্তর্জাতিক মান ও বিধিনিষেধ মেনে চলা বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের পূর্বশর্ত, এবং এর মাধ্যমে কৃষক, রপ্তানিকারক ও অন্যান্য অংশীদাররা আরও ভালো আর্থিক ফলাফল পেতে পারেন।
আলোচনায় আরও উঠে আসে সরকারী সংস্থা, বেসরকারি রপ্তানিকারক ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরও কার্যকর সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা, যাতে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির পূর্ণ সম্ভাবনা উদ্ভাসিত হয়।
বক্তব্যে সচিব মাহবুবুর রহমান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর সঙ্গে, বিশেষ করে সুইসকন্টাক্টের সঙ্গে, যৌথভাবে কাজের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিপণ্য যেন আরও প্রতিযোগিতামূলক, মানসম্মত ও নিরাপদভাবে বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, সেদিকে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানের শেষে সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে টেকসই অংশীদারত্বের আহ্বান জানানো হয়,যাতে গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তাকে ভিত্তি করে একটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক কৃষি রপ্তানি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফভিএপিইএ), এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি ও রপ্তানিকারকগণ অংশ নেন।




