ছাত্রদল নেতা রবিউল হত্যা

এজাহারে নিরপরাধদের নাম জড়ানোর অভিযোগ 

অনলাইন ডেস্ক: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮-৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। তবে এ মামলায় অনেক নিরপরাধের নাম জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রবিউলের বাবা মিজানুর রহমান ওরফে দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা আউয়াল হাওলাদারকে। বাবুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না।

এদিকে মামলার এজাহারনামীয় ৭ থেকে ১১নং আসামিদের নাম নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এরা কেউই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন; রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে।

এজাহারনামীয় যাদের নিয়ে প্রশ্ন তারা হলেন-

৭) মো. শফিউল আজম শাহিন- দেশের একটি স্বনামধন্য এক্সপোর্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাপ্লাই চেইন বিভাগের প্রধান। ঘটনার দিন তিনি ঢাকায় নিজ অফিসে কর্মরত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

৮) মো. আমিনুল ইসলাম লিপন- বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। ঘটনার সময় তিনি ঢাকায় দলীয় কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

৯) মিজানুর রহমান কবিরাজ– দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক।

১০) মো. মিলন সরদার– মিরপুর বাংলা কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক; তিনিও ঘটনার দিন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

১১) মো. সাইদুর রহমান– ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত আবেদনের জন্য সেদিন বরিশালের র‌্যাব-৮ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

এলাকাবাসীর দাবি, যারা প্রকৃতপক্ষে সংঘর্ষে ছিলেন, তাদের বাদ রেখে নিরীহ ও শিক্ষিত-সজ্জন ব্যক্তিদের জড়িয়ে মামলা দেওয়া অন্যায় ও উদ্দেশ্যমূলক। একই সঙ্গে রবিউলকে যারা হত্যা করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চান তারা।

জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রবিউল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে নিরীহ কিছু মানুষের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।

এমন অভিযোগের বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত আক্রোশবশত হয়রানি করা হবে না।’

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ নেই। যারা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক-এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা মোটেও বরদাশত করা হবে না।’

Related Articles

Back to top button