আড়াইহাজারে প্রথম বারের মতো ইউনিব্লকে নির্মিত হচ্ছে সড়ক

অনলাইন ডেস্ক: জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-২০৩০ বাস্তবায়নে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ সরকারের নতুন উদ্যোগ এখন গ্রামীণ রাস্তায়। পোড়ানো ইটের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ রক্ষা করতে ইউনিব্লক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়েছে আড়াইহাজার উপজেলায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সিআরডিপি-২ প্রকল্পের আওতায় সাতটি গ্রামীণ সড়কে এই আধুনিক ব্লক বসানোর কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে পুরোপুরি চালু হলে এলাকার যোগাযোগ, কৃষি ও বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
রাস্তাগুলো হলো উপজেলার বড় বিনাইরচর-বালিয়াপাড়া জিসি রোড ছয় কিলোমিটার, বালিয়াপাড়া জিসি-ঈদবারদী আরএইচডি রোড ৩.৫ কিলোমিটার, মনোহরদী-লস্করদী বাজার রোড ১ কিলোমিটার, কালীবাড়ি বাজার-মনোহরদী রোড ১.৫ কিলোমিটার, তিলচন্দী-ফাউসা বাজার রোড ৩.৫ কিলোমিটার, প্রভাকরদী আরএইচডি-ফরিদা বাজার রোড দুই কিলোমিটার এবং নওদা-চারগ্রাম রোড চার কিলোমিটার। এই সাত সড়কে ইউনিব্লকের ঝকঝকে সারি এখন দৃশ্যমান।
উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গ্রামীণ রাস্তায় কার্পেটিং করলে অতিবৃষ্টিতে পুকুর-খালের পানি উঠে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। গাছের শিকড়, পাশের মাটির চাপ, সব মিলিয়ে মেরামতের খরচ বাড়ে। ইউনিব্লক এসব সমস্যার সমাধান। প্রতিটি ব্লকের ডিজাইন স্টেংস্থ ৪০০০ পিএসআই। ট্রাক, লরি চললেও ভাঙবে না। মেরামত লাগবে না বছরের পর বছর।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো বন্ধ হলে বায়ুদূষণ কমবে, মাটির স্তর রক্ষা পাবে। গ্রামের মানুষের জন্য টেকসই রাস্তা মানে সহজ যাতায়াত, কৃষিপণ্য দ্রুত বাজারে পৌঁছানো, ব্যবসায় গতি।’
এলজিইডি নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুজ্জামান বলেন, ‘ইউনিব্লক শুধু রাস্তা নয়, এটা আমাদের উন্নয়নের নতুন মডেল। এর প্রয়োজনীয়তা এখন অপরিহার্য। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে হবে। ইউনিব্লক তৈরিতে বিদ্যুৎ ও বর্জ্য পুনর্ব্যববহার করা হয়, কোনো জ্বালানি পোড়ানো লাগে না। এটা দীর্ঘমেয়াদি, খরচ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আড়াইহাজারের এই প্রকল্প সফল হলে দেশের অন্যান্য উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কাজ শেষ হলে এলাকার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা শক্তিশালী হবে। কৃষকরা উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে উপজেলা ও জেলায় পৌঁছাতে পারবেন। জমির মূল্য বাড়বে, শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত সহজ হবে। ইউনিব্লকের এই যাত্রা শুধু রাস্তা নয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ উন্নয়নের নতুন অধ্যায়। পরিবেশ রক্ষা করে টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার প্রতিশ্রুতি এখন আড়াইহাজারের মাটিতে লেখা হচ্ছে, ব্লকের পর ব্লক।




