উঠতি মডেল থেকে তারকা, রুক্মিণীর নানা অধ্যায়ের সাক্ষী

অনলাইন ডেস্ক: আসন্ন দুর্গাপূজায় আপামর বাঙালি নারীর পথেই হাঁটছেন টালিউড অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। আর তাই পূজা উপলক্ষ্যে শাড়ি কিনতে তিনি পৌঁছে গেছেন বালিগঞ্জের সিমা গ্যালারিতে। সেখানে শুরু হচ্ছে ‘আর্ট ইন লাইফ’। পূজার কেনাকাটার জন্য এমন প্রদর্শনীই পছন্দ টালিউড অভিনেত্রীর। একটি প্রদর্শনীতে সব রকম জিনিসের সম্ভার। শাড়ি, ব্যাগ, গহনা, লং জ্যাকেট, গৃহসজ্জার উপকরণসহ আরও অনেক কিছু।

গত দুই বছর ধরে মায়ের আলমারির সৌন্দর্য রুক্মিণী মৈত্রের চোখে ধরা পড়ছে। এতদিন মায়ের প্রতি তার অভিযোগ ছিল—মা, তুমি তো কেজি দরে শাড়ি কেন? প্রতি সপ্তাহে নাকি তিনটি করে শাড়ি কিনতে ভালোবাসেন তার মা মধুমিতা মৈত্র। মায়ের এই অভ্যাস পছন্দ ছিল না রুক্মিণীর। কিন্তু সেই মেয়ে এখন পূজায় শাড়ি কেনেন।

অভিনেত্রী বলেন, ধীরে ধীরে মায়ের মতোই হয়ে যাচ্ছি। পূজার আগেই সেটা বেশি টের পাই। যে মেয়ে সারা বছর জিন্স-শার্ট কিংবা টি-শার্টেই বেশি স্বচ্ছন্দ, তার আলমারিতে একটু একটু করে শাড়ির সংখ্যা বাড়ছে।

মায়ের মতো এখনো শাড়ির বাছাইয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়নি রুক্মিণীর। তবে একরঙা শাড়ি কিনলে নাকি বিপদ কম— এমনই টোটকা শিখে নিয়েছেন অভিনেত্রী। যা-ই হয়ে যাক, সাজ নিয়ে অপ্রস্তুত হওয়ার ঝুঁকি নাকি কম থাকে।

তবে পূজার অন্যান্য দিনের সাজে পাশ্চাত্য ছোঁয়া থাকলে খুশিই হবেন নায়িকা। লং জিন্সের সঙ্গে টপ বা কুর্তি পরে এখনো বেশি স্বচ্ছন্দ রুক্মিণী। পোশাক কিনতে গেলে পুরুষের জন্য রাখা জামাকাপড়ে বেশি নজর যায় অভিনেত্রীর।

রুক্মিণী বলেন, আমার সব জ্যাকেট, ওভারসাইজড জামাকাপড় কেনা হয়েছে পুরুষের সেকশন থেকে। ওদের সেকশনের সবচেয়ে ছোট সাইজের জামা পরি আমি। বিদেশে গেলেও এভাবেই শপিং করতে পছন্দ করি।

অভিনেত্রী বলেন, একবার দেবের আলমারি থেকে সেরা সাজটা সেজেছিলাম আমি। ‘টেক্কা’ সিনেমার একটা শুটে আমি গোলাপি একটা স্যুট পরেছিলাম। ছোট করে কাটা চুল, তার সঙ্গে মানানসই সঠিক ফিটের একটা স্যুটের প্রয়োজন ছিল। মেয়েদের জন্য এই ফিটের জামা কেউ বানায় না। হঠাৎই মনে হলো, দেবের গোলাপি স্যুট আমাকে ভালো মানাতে পারে।

বালিগঞ্জের সিমা আর্ট গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার নিজেই প্রদর্শনী ঘুরিয়ে দেখালেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রকে। এ দেশের বিভিন্ন প্রদেশের শিল্পীর তৈরি শাড়ির সম্ভার রয়েছে সেখানে। কর্নাটকের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শাড়ি থেকে শুরু করে নামি শিল্পীদের তৈরি স্কার্ফ— সবই পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে ঘর সাজানোর নানাবিধ সামগ্রীও।

অভিনেত্রী প্রথমেই বেছে নিলেন একটি শাড়ি। সাদার ওপর লাল চেক কাটা। দুর্গাপূজার বৈগ্রহিক রংমিলন্তি— সাদা ও লাল। তবে এই শাড়ির চেকগুলোতেই রয়েছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। একটি শাড়িতেই সব রকমের চেক দেখা যাবে। উপরন্তু দামও বেশ কম রাখা হয়েছে। যাতে সব শ্রেণির মানুষ এ পূজায় ‘সিমা’র শাড়ি পরতে পারেন।

হালকা সুতির শাড়ির সঙ্গে ডিজাইনার পরমা গঙ্গোপাধ্যায়ের লাল ব্লাউজ পরলেন রুক্মিণী। অষ্টমীর সকালে এমন সাজ বেশ মানানসই বলেই মনে করেন অভিনেত্রী। কানের ঝোলা দুল, হাতের মোটা বালা, আর চোখে ছোট্ট লাল টিপ।

তবে উৎসবেই যে ছক ভেঙে আনন্দ, আর তাই রুক্মিণীর মতো কেতাদুরস্ত নতুন প্রজন্মের নায়িকার যে ‘বোবো ক্যালকাটা’ শাড়ি ও ব্লাউজের প্রতি চোখ যাবে, তা স্বাভাবিক। অপ্রচলিত নকশা ও রঙের ছকভাঙা খেলায় ডিজাইনার বোবোর শৈল্পিক ছোঁয়া। আর সেই সাজেই নজর কাড়লেন রুক্মিণী। নবমীতে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টির জন্য এমন সাজের পরিকল্পনা শুরু নায়িকার। কারুস্তুতির একরঙা শাড়ি ও পরমার লাল ব্লাউজে চোখধাঁধানো সাজ অভিনেত্রীর।

Related Articles

Back to top button