প্রতিটি আইন করার ক্ষেত্রে সরকার গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছে: টিআইবি

‘সংস্কার ততটুকুই হবে, যতটা আমলারা চায়’
অনলাইন ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি আইন করার ক্ষেত্রে গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
সংস্কার কমিশনের প্রধান হওয়ার পরও তাকে অন্য মাধ্যম থেকে অধ্যাদেশের খসড়া পেয়ে মতামত দিতে হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা সংস্কারের কথা যত বলি না কেন, বাংলাদেশে সংস্কার ততটুকুই হবে যতটা আমলারা চায়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘কর্তৃত্ববাদের পতন-পরবর্তী বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন তিনি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে সংস্কারের পথে বড় অন্তরায় আমলাতন্ত্র। আর এর পেছনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে রাজনীতিবিদদের ‘আওয়ার টাইম’ সংস্কৃতি। ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিলাম, এবার আমাদের পালা। রাজনীতিবিদ ও আমলাতন্ত্রের এমন মানসিকতার কারণে সংস্কারের সম্ভাবনা ঝুঁকিতে পড়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদক সংস্কার কমিশন যে আশু বাস্তবায়ন প্রস্তাবগুলো সরকারকে দিয়েছিল, অধ্যাদেশ করার সময় তার শতভাগই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, কমিশনের প্রস্তাবনায় দুদকের জন্য একটি ‘বাছাই’ ও ‘পর্যালোচনা’ কমিটির কথা বলা ছিল। অধ্যাদেশ করার সময় ‘বাছাই’ শব্দটি রেখে ‘পর্যালোচনা’ শব্দটি ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা জানার পর তিনি শীর্ষ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা ‘পর্যালোচনা’ রাখতে রাজি হন। এরপর তিনি জানতে পারেন, সেটা বাতিল করা হয়েছে।
আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে গণমাধ্যমের পরিস্থিতি উন্নয়ন ও স্বাধীনতা নিশ্চিতে ১২টি সুপারিশ দিয়েছে টিআইবি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ অনতিবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, কমিশনের সুপারিশ মেনে প্রেস কাউন্সিল বিলুপ্ত করে স্বাধীন জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন গঠন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা ও শ্রম আইন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী করা এবং নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি চাকরির সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদান ইত্যাদি।
অনুষ্ঠান শেষে প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় দুর্নীতিবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২৫ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে যশোরের দৈনিক গ্রামের কাগজের আশিকুর রহমান ও ফয়সাল ইসলাম, জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে ডেইলি সান পত্রিকার রাশেদুল হাসান, টেলিভিশন বিভাগে ৭১ টিভির মুফতি পারভেজ নাদির রেজা এবং টেলিভিশন প্রামাণ্য বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর।



