রাজশাহী অঞ্চলে মাদকের চোরাচালান বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক: সীমান্তে কড়া নজরদারি সত্ত্বেও রাজশাহী অঞ্চলে মাদক চোরাচালান বেড়েছে। প্রায়ই মাদক বাহক ধরা পড়লেও আড়ালে থাকছে গডফাদারেরা। এদিকে গডফাদাররা ধরা না পড়ায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে থাকা মাদক কারবারিদের অনেকেই ইতিমধ্যে খোলস পালটে আবারও এলাকায় ফিরেছে।

আবার কেউ দেশের বাইরে থেকে মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। কেউ আবার কারাগারে বসে কেউ মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় প্রতিদিন মাদক উদ্ধার ও বাহক ধরা পড়ছে। তার পরও থেমে নেই মাদকের কারবার। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর অভিমত, যে পরিমাণ মাদক ও বাহক ধরা পড়ছে, তার চেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে সূত্র সম্প্রতি বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে রাজশাহী অঞ্চল থেকে ঢাকায় ট্রলিব্যাগ ভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক পৌঁছার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। যদিও যৌথ বাহিনীর অভিযানে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের চালানটি জব্দ হয়।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে তালিকাভুক্ত প্রায় অর্ধশত পাইকারি মাদক কারবারি রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিগত সরকার আমলে জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো পলাতক। তবে অনুসারীরা এখনো মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। পলাতক মাদক কারবারিরা আড়ালে থেকে অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণ করছে। মাদকের কারবারি ও গডফাদার অনেকে শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এর মধ্যে একাধিক উপজেলা ও কয়েক জন ইউপি চেয়ারম্যান এবং ২৫-৩০ কাউন্সিলর রয়েছেন। এছাড়া একাধিক সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক কারবারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের অভিযোগ পুরোনো।

সূত্র জানায়, ভারতীয় সীমান্তপথে গডফাদারেরা হেরোইনের কারবার করছে। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি সত্ত্বেও মাদকের কারবার বেড়েছে বলেও দাবি করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। নজরদারি আরো বাড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গোদাগাড়ীর চর আষাঢ়িয়াদহ এলাকার বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, ‘আগে সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের প্রায় প্রতিদিন দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে বিজিবি সদস্য ছাড়া তেমন কাউকে আরো দেখা যায় না। ফলে মাদক কারবারিরা হয়তো নিজেদের নির্ভার ভাবছে। এই সুযোগে যার যার মতো মাদক ব্যবসা চাঙা করছে। তবে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাদক ও অস্ত্র কারবারিদের বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স বলবৎ আছে। রাজশাহী পুলিশ মাদক ও অস্ত্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে। টহলও জোরদার আছে। চলমান অভিযানে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে।’

Related Articles

Back to top button