ল্যুভ জাদুঘরের মূল্যবান রত্ন-গহনা ব্যাংক অব ফ্রান্সে স্থানান্তর

অনলাইন ডেস্ক: দিনের আলোয় সংঘটিত এক ডাকাতির ঘটনায় পর ল্যুভ জাদুঘরের সবচেয়ে মূল্যবান রত্নগুলো ব্যাংক অব ফ্রান্সে স্থানান্তর করেছে দেশটির প্রশাসন।

ফরাসি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার এক বিশেষ নিরাপত্তা অভিযানে পুলিশ পাহারায় জাদুঘর থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে অবস্থিত ব্যাংকে এই রত্নগুলো স্থানান্তর করা হয়। এখন সেগুলো সংরক্ষিত থাকবে ব্যাংকের সর্বাধিক নিরাপদ ভল্টে। যা মধ্য প্যারিসে অবস্থিত ব্যাংকের ঐতিহাসিক সদর দপ্তরের ৮৫ ফুট নিচে।

ব্যাংকের এই ভল্টে বর্তমানে ফ্রান্সের প্রায় ৯০ শতাংশ সোনার মজুদ রাখা আছে। এছাড়া লিওনার্দো দা ভিঞ্চির নোটবুকসহ বহু জাতীয় সম্পদও এখানেই সংরক্ষিত। এর মোট আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ইউরো।

ব্যাংক অব ফ্রান্সের তথ্যমতে, সাউটারেন নামের এই ভল্ট এমনভাবে নির্মিত, এটি যেকোনো ধরনের হামলা প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এর প্রবেশপথে রয়েছে ৫০ সেন্টিমিটার পুরু, ৭ টন ওজনের দরজা, আগুন-প্রতিরোধী কংক্রিট ও ইস্পাত দ্বারা সুরক্ষিত। দরজার পেছনে রয়েছে ৩৫ টনের একটি ঘূর্ণায়মান কংক্রিট টাওয়ার। ফলে জোরপূর্বক প্রবেশ কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।

গত রোববার মুখোশধারী একদল চোর অ্যাঙ্গেল গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী জানালা ভেঙে ল্যুভরের বিখ্যাত অ্যাপোলো গ্যালারিতে প্রবেশ করে। যেখানে ফ্রান্সের রাজমুকুট রত্ন প্রদর্শিত হয়। মাত্র আট মিনিটে তারা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী মেরি-লুইসের নেকলেস এবং নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটসহ মূল্যবান অলঙ্কার। আর এই অলংঙ্কারের বাজারমূল্য প্রায় ৮ মিলিয়ন ইউরো।

দেশটির পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চোরেরা একটি লরির পেছনে স্থাপন করা যান্ত্রিক মই ব্যবহার করে প্রথম তলার বারান্দায় উঠে গ্যালারিতে প্রবেশ করে এই অলংঙ্কার চুরি করে।

এদিকে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট নুনেজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আমার পূর্ণ আস্থা আছে, চোরেরা ধরা পড়বেই।’

তবে জাদুঘরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফরাসি মন্ত্রীরা দাবি করেছেন, সেদিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথভাবে কাজ করেছিল। কিন্তু ল্যুভরের পরিচালক লরেন্স ডে কারস স্বীকার করেছেন, জাদুঘরের অবকাঠামো দুর্বল ও পুরোনো।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) তিনি ফরাসি সংসদে জানান, যেখানে চুরির ঘটনা ঘটেছে, সেই দেয়ালের উপর নজরদারির দায়িত্বে থাকা একমাত্র নিরাপত্তা ক্যামেরাটি ঘটনার সময় ভুল দিকে ঘোরানো ছিল।

Related Articles

Back to top button