হবিগঞ্জের সব আসন দখলে নিতে চায় বিএনপি


ইসলামি দলগুলোর প্রার্থীরাও ব্যস্ত প্রচারণায়, এখনো প্রার্থী দেয়নি এনসিপি
অনলাইন ডেস্ক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ জেলায় নির্বাচনি তত্পরতা জমজমাট হয়ে উঠেছে। জেলা ও উপজেলা সদর এবং হাট-বাজারগুলোতে রাজনৈতিক তত্পরতা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীদের সমর্থকগণ রঙিন পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বিতরণ করে গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রায় প্রতিদিন জনসভাও করছেন।
এদিকে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রেজা কিবরিয়ার নাম ঘোষণা করা হয়। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জের কোনো আসনে বিজয়ী না হতে পারলেও এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিএনপি জেলার চারটি আসনেই বিজয়ী হবে বলে তাদের নেতাকর্মীরা আশা করছেন। তবে জেলার কোনো আসনেই এখনো জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) :একটি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপি এখনো পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় এখানে নির্বাচনি আমেজ অনেকটা কম। বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া নির্বাচনি মাঠে বেশ জোরেশোরে নেমেছিলেন। কিন্তু সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মুখলিছুর রহমান এলাকায় গণসংযোগ, মিছিল, মিটিং করে চলেছেন। অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তত্পরতা তেমন দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া এ আসনে প্রচারণায় আছেন জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আবু হানিফা আহমদ হোসেন, খেলাফত মজলিসের মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মুফতি সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী ও গণঅধিকার পরিষদের আবুল হোসেন জীবন।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) :২০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনটি দীর্ঘদিন যাবত্ আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এ আসনে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে একজন রণে ভঙ্গ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন প্রাথমিক দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এ আসনে বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সৌদি আরব বিএনপির সভাপতি ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আহমদ আলী মুকিব। এ আসনে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ (বড় হুজুর)। এছাড়া প্রচারণা চালাচ্ছেন গণঅধিকার পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান আজমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা নোমান আহমদ সাদিক ও ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা হাদীসুর রহমান রুহানী।
হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) :১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার সমন্বয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী হচ্ছেন দলের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক পৌরসভা মেয়র জি কে গউছ। এ আসনে অপর প্রার্থীরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মজলিস এ সুরা সদস্য মহিব উদ্দিন আহমেদ সোহেল, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান, জামায়াতে ইসলামীর কাজী মহসিন আহমদ, খেলাফত মজলিসের অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার রহমান চৌধুরী ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের লন্ডন শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলামিন ভুঁইয়া।
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) :দুটি পৌরসভা ও ২৩টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত এ নির্বাচনি এলাকায় বেশ কয়েকটি চা-বাগান থাকায় এখানকার বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের সিহংভাগ ছিল সাবেক সরকার দলীয় সমর্থক। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে শিল্পপতি সৈয়দ মো. ফয়সলের নাম ঘোষিত হওয়ায় তিনি নির্বাচনি মাঠে তত্পর হয়ে উঠেছেন। এছাড়া নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পাওয়া সাংবাদিক অলিউল্লাহ্ নোমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঢাকা উত্তর শাখার সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসেন রাজী ও ইসলামী আন্দোলনের কামাল উদ্দিন। সূত্র ও ছবি: দৈনি ইত্তেফাক




