পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত করছে

স্ত্রীকে দিয়ে এসপি ও ওসির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এসআইয়ের

অনলাইন ডেস্ক: এসপি ও ওসির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে দিয়ে মামলা করিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনায় এসেছেন এসআই মনিরুজ্জামান। মূলত স্বামীকে বিভাগীয় শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে গত ২২ অক্টোবর গাইবান্ধা জেলা আমলী আদালতে মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলি খাতুন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া এ্যান্ড প্ল্যানিং শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, পুলিশের চেইন অব কমান্ড রয়েছে। এসআই মনিরুজ্জামান সেগুলোর কোন তোয়াক্কাই করেননি। বরং তিনি নিজে বাঁচতে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছেন। এসব নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত করছে।

পুলিশের তদন্ত সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৫ মার্চ গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের নিকট লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানার বুড়িমারি গ্রামের তারিকুজ্জামান তুহিন নামের জনৈক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, গাইবান্ধা সদর থানায় কর্মরত এসআই মনিরুজ্জামান বাংলা খবর ১৯৭১ নামের একটি ভুয়া পেজ খুলে সেখানে তার নামে নানা ধরনের কুৎসা রটনা করছে। এসব দেখে পাটগ্রাম থানা পুলিশ তুহিনকে আটক করে। পরে পুলিশ বিষয়টি বুঝতে পেরে তুহিনকে ছেড়েও দেয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযোগের পর পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলামের মাধ্যমে এসআই মনিরুজ্জামানকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। এ সময় পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হলে তার মোবাইল ফোন ও লেনেভো ল্যাপটপ জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডি সদরদপ্তরে পাঠানো হয়। পরে এসআই মনিরুজ্জামানকে গাইবান্ধা জেলা থেকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়। রাজশাহী রেঞ্জ থেকে তাকে জয়পুরহাট জেলায় পদায়ন করা হয়। এর দীর্ঘদিন পর গত ২২ অক্টোবর মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলি খাতুন গাইবান্ধা সদর আমলি আদালতে মোবাইল ও ল্যাপটপ আটকে রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এসপি, সদর থানার ওসি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তারিকুজ্জামানকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকৃত ঘটনা হলো এসআই মনিরুজ্জামানের ব্যবহৃত পেজে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোস্ট দেয়া হয়। এরপর টার্গেটকৃত ওই ব্যক্তির কাছ থেকে পেজ থেকে পোস্ট ডিলিট করার জন্য মোটা অংকের চাঁদা নেয়া হয়। এ ঘটনা গাইবান্ধা জেলা পুলিশ তদন্ত করছে। এই তদন্ত ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য এসআই মনিরুজ্জামান তার স্ত্রীকে দিয়ে এসপি, ওসি ও ভিকটিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ তো কেউ আটকে রাখেনি। তার সামনেই সেগুলো জব্দ ও জিডি করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিভাগীয় শাস্তি এড়াতে হয়তো এই কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারেন।’

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা বলেন, এখন যেহেতু পুলিশ সদর দপ্তর বিষয়টি দেখছে সুতরাং এখানে আমার নিজস্ব কোন বক্তব্য নেই।

Related Articles

Back to top button