‘৩৩ গুণ বেশি দামে’ পণ্য কেনা, রেলের ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহীতে রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ১৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বুধবার দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহীর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় সাবেক মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) খোন্দকার শহিদুল ইসলাম ও মো. মজিবুর রহমান, সাবেক কন্ট্রোলার অব স্টোরস (সিওএস–পশ্চিম) মো. খায়রুল আলম, মো. বেলাল হোসেন সরকারসহ মোট ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের সিওএস দপ্তরের মাধ্যমে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তালা, বালতি, বাঁশি, ঝান্ডা, ভিআইপি পর্দা, লাগেজ ফিতা, ওয়াগন কার্ড, চেয়ার, ট্রলিসহ ১৭ ধরনের পণ্য কেনায় ব্যাপক অনিয়ম হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব পণ্য ক্রয়ে বাজার যাচাই না করেই অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পণ্য ক্রয়ে বাজারদরের তুলনায় ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে।

দুদক জানায়, প্রতিটি তালা কেনায় ঠিকাদারকে দেওয়া হয় ৫ হাজার ৫৯০ টাকা, যেখানে এটির প্রকৃত বাজারদর ছিল মাত্র ১৭৩ টাকা। শুধু তালা কেনাকাটাতেই ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা অনিয়ম হয়েছে। একইভাবে ভিআইপি পর্দা কেনায় ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা এবং অন্যান্য সামগ্রী কেনাকাটায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাক্কলন ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৩৩ গুণ বেশি দরে ক্রয়ের পক্ষে সুপারিশ করেছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজশে এসব অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন।

মামলার বাদী দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, মামলা তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ দিন সময় পাওয়া যাবে। এখনো তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। কমিশন যাঁকে নিয়োগ করবে, তিনি তদন্তকাজ করবেন। সূত্র ও ছবি: দৈনিক প্রথম আলো

Related Articles

Back to top button