গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে বাজার দখলের অভিযোগ রবি ও বাংলালিংকের

অনলাইন ডেস্ক: গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রি করে বাজার দখলের অভিযোগ এনেছে দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটর রবি ও বাংলালিংক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, রবি ও বাংলালিংক বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে।

কমিশন জানিয়েছে, রবির অভিযোগের তদন্ত ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে মামলা হতে পারে। তবে গ্রামীণফোন তাদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন বাজারে চারটি অপারেটর সেবা দিচ্ছে, যার মধ্যে মোট ১৮ কোটি ৮৪ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৮ কোটি ৬৫ লাখই গ্রামীণফোনের। গ্রামীণফোন কেবল গ্রাহক সংখ্যায় নয়, বরং প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার বাজারের অর্ধেকও নিজেদের দখলে রেখেছে। এ কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গ্রামীণফোনকে ‘বাজারের আধিপত্যকারী’ বা ‘এসএমপি’ (Significant Market Power) অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করে এবং কলরেট বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে।

সম্প্রতি রবি ও বাংলালিংক প্রতিযোগিতা কমিশনে অভিযোগ করেছে যে, গ্রামীণফোন অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রি করে বাজার প্রভাব বিস্তার করছে। বাংলালিংকের চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, গ্রামীণফোন একটি এসএমপি অপারেটর হওয়া সত্ত্বেও এমনভাবে সিম বিক্রি করছে যা অন্য অপারেটরদের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন করে তুলছে। তিনি দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রাপ্ত নথি অনুযায়ী, গত বছর সরকার প্রতিটি সিমে ৩০০ টাকা কর ধার্য করলেও, অপারেটররা বাজার দখলের জন্য ভর্তুকি দিচ্ছে। রবি প্রতিটি সিম ১৯৯ টাকায় বিক্রি করেছে, যেখানে গ্রামীণফোন বিক্রি করেছে ১৬৯ টাকায়। একইসঙ্গে, গ্রামীণফোন বিক্রেতাদের ১২২ টাকা কমিশন দিয়েছে, যা রবির দেওয়া সর্বোচ্চ ৮৯ টাকার চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে কমিশন বাদ দিলে গ্রামীণফোনের সিমের প্রকৃত মূল্য দাঁড়ায় মাত্র ৪৭ টাকা, যা রবির তুলনায় ৫৭ শতাংশ কম। রবির চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম অভিযোগ করেন যে, গ্রামীণফোন প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করে গ্রাহক টানছে এবং এ কারণে রবিও একই পথে যেতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি প্রতিযোগিতা কমিশনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করেন।

গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ অবশ্য এই অভিযোগ সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি জানান, গ্রামীণফোন সকল নিয়মকানুন মেনেই তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং কোনো ধরনের আইন লঙ্ঘন করেনি।

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন এ এইচ এম আহসান জানিয়েছেন, রবির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছে এবং শিগগিরই গ্রামীণফোনকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। তিনি আরও জানান, বাংলালিংকের অভিযোগের তদন্তও দ্রুত শুরু হবে।

Related Articles

Back to top button