রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা কমছে ১ হাজার কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানি খাতে নগদ প্রণোদনা ১ হাজার কোটি টাকার বেশি কমানো হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বাজেটে রপ্তানিকারকদের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা ভাবছে সরকার। বিদায়ি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ২৫ কোটি টাকা। টানা দ্বিতীয় বছরের মতো নগদ প্রণোদনা কমানো হচ্ছে সরকারের নীতির অংশ হিসেবে, যার লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে এই সহায়তা তুলে নেওয়া।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে প্রণোদনা কমিয়ে দেওয়ার ফলে যে ক্ষতি হবে, তা পূরণে সরকার নীতিগত সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবছে। এর মধ্যে আছে বিদ্যুৎ বিলের ওপর ছাড়, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের সুবিধা এবং ব্যবসার পরিবেশ সহজ করা। এদিকে, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

২০২৬ সালের শেষ নাগাদ সিংগাপুরের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া চীন ও জাপানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চলছে। বর্তমানে ৪৩টি রপ্তানি পণ্য নগদ প্রণোদনার আওতায় রয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এই সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও প্রণোদনার হার কমে যাবে। এখন পোশাক রপ্তানিতে সব বাজারে ০.৩০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। নতুন বাজারে প্রবেশে প্রণোদনা রয়েছে ২ শতাংশ। কৃষিপণ্য, আলু ও প্রক্রিয়াজাত মাংস রপ্তানিতে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হয়, যা সব খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ। চামড়ার একটি বিশেষ ধরনের রপ্তানিতে সরকার ৬ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রণোদনা পাওয়া খাতগুলোর পরিবর্তে নতুন ও সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা উচিত। তবে রপ্তানিকারকরা এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, প্রণোদনা কমালে রপ্তানি হ্রাস পেতে পারে এবং দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইন্ডাস্ট্রিটা আমদানি-নির্ভর একটা রপ্তানি শিল্পে পরিণত হবে। তাহলে রিজার্ভ কমবে, ডলার-সংকট আরো বাড়বে।

Related Articles

Back to top button