ধর্মীয় আধিপত্য বা বিশেষ কোনো মতাদর্শ চাপিয়ে দিতে গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: জোনায়েদ সাকি

অনলাইন ডেস্ক: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান কোনো ধর্মীয় আধিপত্য বা নির্দিষ্ট মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে হয়নি। বরং দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই জনগণ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।

গতকাল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরে অনুষ্ঠিত মাথাল মিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই–আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানে হাজারো তরুণ রক্ত দিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পথ তৈরি করেছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা ও গুলি চালানোর পর দেশব্যাপী জনতার ঐক্য গড়ে ওঠে। ছাত্র সমাজের অগ্রণী ভূমিকার কারণেই সাধারণ মানুষ আন্দোলনে যুক্ত হন।

সারা দেশে চলমান মাথাল মিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর গণসংহতি আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংগঠনের প্রার্থীদেরও দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

বন্দরের সাম্প্রতিক চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরকার আলোচনা ছাড়া একতরফাভাবে চুক্তি করেছে।

আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে সাকি বলেন, “আমরা পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রা সফল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক অধিকার ছাড়া বাকস্বাধীনতা ও জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।”

সংবিধান সংস্কারের দাবি

জোনায়েদ সাকি বলেন, সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামোতেই কর্তৃত্ববাদ, স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের ভিত্তি নিহিত। তিনি উল্লেখ করেন— সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিধান, নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠন, বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, রাষ্ট্রপতি–প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য— এসব মৌলিক সংস্কার ছাড়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, শুধু রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেই মানুষের জীবনমান উন্নত হয় না। লুটপাটের অর্থনীতি চলতে থাকলে বৈষম্য বাড়বে, সম্পদ শোষিত হবে, টাকা পাচার অব্যাহত থাকবে। তাই শ্রমিক–কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

Related Articles

Back to top button