বিমানে ছিলেন না, তবু সেই দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ গেল গুজরাটি নির্মাতার

অনলাইন ডেস্ক: গত ১২ জুন ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ও রহস্যজনক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতের গুজরাটে আহমেদাবাদের ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় ‘এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১’। বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর একজন বাদে সবারই মৃত্যু হয়। এবার জানা যাচ্ছে, সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক চলচ্চিত্র নির্মাতারও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটি চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ কালাওয়াডিয়া, যিনি মহেশ জিরাওয়ালা নামেও পরিচিত ছিলেন, ১২ জুন আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তার স্ত্রী হেতাল দাবি করেছিলেন এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে তিনি বিমান দুর্ঘটনার সময় রাস্তায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে থাকতে পারেন। এখন সে খবর আনুষ্ঠানিক হলো, ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর।
জানা যাচ্ছে, মহেশ বিমানে ছিলেন না, বরং সেই ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন, যাদের ওপর বিমানটি এসে পড়েছিল।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া পোড়া স্কুটার দেখেই প্রথমে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে তিনি দুর্ঘটনার দিন শাহিবাগের কাছে নিখোঁজ হয়েছেন এবং মারা গিয়েছেন। অনেক গুজরাটি মিডিয়া পোর্টাল অনুসারে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে মহেশ জিরাওয়ালার সেই পুড়ে যাওয়া অ্যাক্টিভা স্কুটারটি উদ্ধার করা হয়েছে, যা দুর্ঘটনায় তাঁর মারা যাওয়ার সন্দেহকে আরো বাড়িয়ে তুলেছিল। পরে ডিএনএ পরীক্ষার পর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
শুরুতে পরিচালকের পরিবার তার পরিবার প্রথমে তার মৃতদেহ গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন না, কারণ কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না যে মহেশের মৃত্যু হতে পারে।
কিন্তু পুলিশ যখন এক্টিভার চ্যাসিস নম্বর এবং ডিএনএ রিপোর্টসহ অনেক প্রমাণ উপস্থাপন করে, তখন পরিবারকে মেনে নিতে হয় যে সেই মৃতদেহ মহেশেরই।
মহেশ জিরাওয়ালা গুজরাটের নরোদা, আহমেদাবাদ শহরের বাসিন্দা ছিলেন। মহেশ বিজ্ঞাপন এবং মিউজিক ভিডিও পরিচালনার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি মহেশ জিরাওয়ালা প্রডাকশন্সের সিইও ছিলেন। তার পরিচালনায় অনেক মিউজিক ভিডিওর কাজ হয়েছে, যা মূলত গুজরাটি ভাষায় তৈরি।
তিনি ২০১৯ সালের সিনেমা ‘ককটেল প্রেমী প্যাগ অফ রিভেঞ্জ’-এরও পরিচালনা করেছিলেন, যেখানে আশা পাঁচাল এবং বৃতি ঠাক্কর মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ১২ জুন আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন নিহত হন। একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী ছিলেন ১১-এ সিটে থাকা এক ব্রিটিশ-ভারতীয় নাগরিক। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩৩ জন প্রাণ হারান, যা এটিকে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় পরিণত করেছে।