বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচনের নেপথ্যে ছিলেন যে ৩ সিইসি

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে বহুল বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। অভিযোগ আছে, তিনটি নির্বাচনে বিগত সরকারকে টানা জয় এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে এরাই মূল কারিগর। এদের সহায়তায় একের পর এক জয় পেয়েই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠার সহযোগীই ছিলেন এই তিন নির্বাচন কমিশনের সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা।
৫ আগস্টের পর তিন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কিন্তু এরপরও তারা এখন পর্যন্ত অধরা। ‘বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচন’ আয়োজনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে সোমবার কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে গতকাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিজ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ পর্যন্ত কোনো কমিটিও গঠন হয়নি।
‘বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচন’ তদন্তে নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনো নথিপত্র চায়নি সরকারের কোনো বিভাগ বা সংস্থা। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ মঙ্গলবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, আমার জানা মতে কেউ তদন্তের বিষয়ে কোনো নথিপত্র চায়নি। তদন্তে কোনো নথিপত্র বা তথ্য চাওয়া হলে তখন বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘একতরফা বিনা ভোটের’ নির্বাচন আয়োজনের অন্যতম কারিগর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বারিধারায় তার নিজ বাসভবনে রয়েছেন। স্ট্রোক করায় তিনি গুরুতর অসুস্থ। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ‘রাতের ভোট’র অন্যতম কারিগর কেএম নূরুল হুদা উত্তরায় নিজ বাসায় আছেন। বই লিখে সময় কাটছে তার। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘আমি-ডামি’ ভোটের কারিগর কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিভৃতে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বাসা থেকে খুব একটা বের হন না। তাদের সন্তানরা অবস্থান করছেন বিদেশে।
ওই তিন নির্বাচন কমিশনের বেশির ভাগ নির্বাচন কমিশনারও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে রয়েছেন। নাম প্রকাশে না করার অনুরোধ জানিয়ে তাদের কয়েকজন যুগান্তরকে বলেন, ৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে তারা কিছুটা নিঃসঙ্গ দিন কাটাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের সময় দিচ্ছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন। তাদের মধ্যে সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বিদেশে। ওই তিন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও গতকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এমনকি ওই তিন নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা অতি উৎসাহী নির্বাচন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।