ঢাবিতে নারী শিক্ষার্থীদের ৭ দিনব্যাপী আত্মরক্ষা ও আত্মবিশ্বাস উন্নয়ন প্রশিক্ষণ শুরু

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, যেখানে নারী শিক্ষার্থীরা শিখছেন আত্মরক্ষার কৌশল ও আত্মবিশ্বাস উন্নয়নের নানা দিক। ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই প্রশিক্ষণ প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত রোকেয়া হল মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২ মে) “আত্মবিশ্বাসে আত্মরক্ষা”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে কর্মসূচির আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস-এর নারী ও শিশু অধিকারবিষয়ক অঙ্গসংগঠন ‘বহ্নিশিখা’। প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন বহ্নিশিখার কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রতিনিধি ফাতেহা শারমিন এ্যানি এবং গ্রীন ভয়েস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শামিমা মাহবুব ডলি।

আয়োজকরা জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের ক্ষমতায়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহ্নিশিখা নিয়মিত এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাবির এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও নারীদের সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আয়োজকরা দাবি করেন, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা শুধু আত্মরক্ষার শারীরিক কৌশলই শিখছেন না, পাশাপাশি নিরাপত্তা সচেতনতা, মানসিক স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবেশবিষয়ক জ্ঞান এবং নেতৃত্ব গঠনের দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বিশেষ এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন আন্তর্জাতিক ব্ল্যাক বেল্টধারী দুই প্রশিক্ষক—বাংলাদেশ তাইকোয়ানদো অ্যাসোসিয়েশনের রাহমাতুল্লাহ নিশান (২য় ড্যান) এবং স্বপ্না কীর্তনীয়া (জ্যোতি) (১ম ড্যান)। তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীরা আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশলের বাস্তব চর্চা করছেন।

প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা পাবেন স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা, সনদপত্র, টি-শার্ট এবং ভবিষ্যতে প্রশিক্ষক হওয়ার সুযোগ। পাশাপাশি বহ্নিশিখার সদস্য হওয়ার মাধ্যমে সংগঠনের অন্যান্য কার্যক্রমেও যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকছে।

প্রশিক্ষণার্থীরা বলেন, এই আয়োজন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং তারা নিজেদের আরও আত্মনির্ভর ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে বলে বিশ্বাস রাখেন। অনেকেই এই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে নারীর ক্ষমতায়নের একটি বাস্তব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।

বিশেষজ্ঞ ও আয়োজকদের মতে, এ প্রশিক্ষণ শুধু আত্মরক্ষায় সহায়তা নয়, বরং নারীদের ব্যক্তিত্ব, আত্মবিশ্বাস এবং নেতৃত্ব বিকাশেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটি নারীদের এগিয়ে চলার পথে একটি কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।