নিরস্ত্র করার আহ্বানে হিজবুল্লাহ সাড়া দেবে না: নাঈম কাসেম

অনলাইন ডেস্ক: লেবাননের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাবশালী সংগঠন হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব যখন চাপ বাড়াচ্ছে, তখন দলটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল নাঈম কাসেম শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দেন—‘হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে কাউকে দেব না।’

হিজবুল্লাহ-ঘনিষ্ঠ এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যে কাসেম বলেন, ‘আমরা কারো হাতে হিজবুল্লাহর বা প্রতিরোধের অস্ত্র তুলে দেব না। ‘নিরস্ত্রীকরণ’ শব্দটাই আমাদের অভিধান থেকে বাদ দিতে হবে।’

এর আগে গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরাইলের সঙ্গে বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে হিজবুল্লাহ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ইসরাইলি হামলায় নিহত হন সংগঠনের দীর্ঘদিনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নাঈম কাসেম।

হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ নেতা ওয়াফিক সাফা শুক্রবার বলেন, ইসরাইল দক্ষিণ লেবানন থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত অস্ত্র হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা হবে না।

আল-নূর রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণের কোনো প্রশ্নই আসে না। প্রেসিডেন্ট যোসেফ আউনের অভিষেক ভাষণে যেটি বলা হয়েছে, তা আসলে একটি প্রতিরক্ষামূলক কৌশল। তবে এর আগে ইসরাইলকে সরে যেতে হবে, বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে, এবং আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এক সময় যে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা অকল্পনীয় ছিল, এখন সেটিই সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

‘সমস্যার উৎস ইসরাইল’

২০২৫ সালের নভেম্বরের অস্ত্রবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, ইসরাইলের উচিত ছিল দক্ষিণ লেবানন থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করা। কিন্তু তারা এখনো পাঁচটি ‘কৌশলগত’ অবস্থানে অবস্থান করছে এবং প্রতিদিনই লেবাননে বিমান হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।

অস্ত্রবিরতির শর্ত অনুযায়ী হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে তাদের যোদ্ধা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তারা ইতোমধ্যে লিতানি নদীর দক্ষিণে থাকা ২৬৫টি সামরিক ঘাঁটির মধ্যে প্রায় ১৯০টি লেবানন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ১৭০১ অনুযায়ী, লেবাননে সব অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীর নিরস্ত্রীকরণ求 করা হয়েছিল, তবে হিজবুল্লাহ বলছে, ‘এই রেজোলিউশন গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পুরো লেবাননে প্রযোজ্য নয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত মর্গান ওর্তাগুস সম্প্রতি বৈরুত সফর করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় লেবানন ‘সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রবিরতি বাস্তবায়ন করুক, যার মধ্যে হিজবুল্লাহসহ সব মিলিশিয়ার নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত।’

কিন্তু হিজবুল্লাহর মতে, ‘সমস্যা হিজবুল্লাহ নয়, সমস্যার উৎস ইসরাইল— যারা এখনো অস্ত্রবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।’

Related Articles

Back to top button