প্রকৌশলীর হাত কেটে নেওয়ার হুমকির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

অনলাইন ডেস্ক: ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিনের ওপর হামলা ও হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের ঠিকাদারি না দেওয়ায় গালিগালাজ, ল্যাপটপ ফেলে দেওয়া এবং শারীরিকভাবে হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ওই প্রকৌশলী।

গতকাল সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে ফেনী পৌরসভায় এ ঘটনা ঘটে।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে পৌরসভার নানা উন্নয়ন কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য ঠিকাদার কামরুল হাসান মাসুদের সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিনের দূরত্ব চলছিল। সম্প্রতি ফেনী পৌরসভায় বিশ্বব্যাংকের প্রায় ২৯ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন কাজ পান রাজধানীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিডিএল। সন্ধ্যায় ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফেনী পৌরসভার চুক্তিসই হওয়ার সময় হঠাৎ বিএনপি নেতা মাসুদ নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে ঢুকে তর্ক শুরু করেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ২৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার একটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এটি তিনটি স্তরে রিভিউ হয়, সরকারি নিয়ম মেনে ইজিপির মাধ্যমে আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু তিনি (মাসুদ) আমাকে চাপ দিচ্ছেন নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে কাজ দিতে। সর্বশেষ কার্যালয়ে এসে গালিগালাজ ও আচরণে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। ল্যাপটপ ছুড়ে ফেলেছেন, ফাইলপত্র নষ্ট করেছেন। আমার বাবা-মাকে জড়িয়ে গালিগালাজ করে বলেছে- কে তোকে স্বাক্ষর করতে বলছে, তোর হাত কেটে নেব। এ সময় বাইরে প্রায় ২০০ ছেলে অবস্থান করছিল। আমরা যদি এমন বাধার মুখে পড়ি তাহলে প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য কামরুল হাসান মাসুদ বলেন, আমার তুহিন এন্টারপ্রাইজ ও নাছির এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠানের কিছু কাজ রয়েছে। সেগুলোর বিল আটকে রাখা হয়েছে দেড় শতাংশ পিসি না দেওয়ায়। পৌর প্রশাসক ও প্রকৌশলী মিলে ঠিকাদারদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কমিশন নিয়ে অন্যদের কাজ দিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার পাওনা টাকার বিষয়ে তার সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়েছিল। কিন্তু হেনস্তার ও হামলার যে অভিযোগ তুলছেন সেটি মিথ্যা। আমরা বলেছি পিসির টাকা দেব না। তাই এখন আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।

ফেনী পৌর প্রশাসক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন বলেন, ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিনি (মাসুদ) একপক্ষের হয়ে দরপত্র দাখিল করেছিল, সেটি না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। পিসি নেওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এছাড়া তার পূর্বের কাজের সব বিলও পরিশোধ করা হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Back to top button