ভাণ্ডারিয়া শিল্পকলা একাডেমি

অরক্ষিত মুক্তমঞ্চ ও প্রশিক্ষণ ভবন, চোর খুলে নিয়ে গেছে ফ্যান-বাতি
অনলাইন ডেস্ক: পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চ ও প্রশিক্ষণ ভবন। ভবনের দরজা, জানালা ভেঙে ফ্যান, পানির মোটর ও বৈদ্যুতিক বাতি নিয়ে গেছে চোর। কোনো কর্মচারী বা নৈশপ্রহরী না থাকায় এ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং নদী তীরবর্তী এলাকা হওয়ায় রাতে ভবনের মধ্যে মাদক সেবনসহ নানা ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলে বলেও স্থানীয়রা জানান। তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ৎরণালয়ের অর্থায়নে ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে পোনা নদীর তীরে ৩০ শতাংশ জমির ওপর পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনের সামনে রয়েছে মুক্তমঞ্চ এবং সুন্দর একটি গ্যালারি। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর কিছুদিন ভালোভাবে চললেও এখন সেটি প্রায় পরিৎযক্ত অবস্থায় আছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনটি পরিৎযক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় স্থানীয় ১৩ নম্বর দক্ষিণ শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. সেন্টু তালুকদার জানান, ভবনের দরজা এবং থাইগ্লাসের জালানা ভেঙে পানির মোটর, প্রতিটি কক্ষে থাকা বৈদ্যুতিক ফ্যান ও লাইট চুরি হয়ে গেছে। ওয়াশরুমের কমোড ভেঙে ফেলা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতি শুক্র ও শনিবার বিকালে মুক্তমঞ্চের সামনে স্থানীয় আদর্শ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ক্লাস চলে, যা পরিচালনা করেন শিল্পী মো. জালাল আহম্মেদ। ভবনের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ভবনের মধ্য থেকে আমাদের প্রায় লক্ষাধিক টাকার ইনস্ট্রুমেন্ট (সরঞ্জামাদি) চুরি হয়ে গেছে। অনেকভাবে চেষ্টা করেও তার সন্ধান পাইনি।’ তিনি জানান, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ করা মো. সজীব নামের এক জন পিয়ন থাকলেও তার কোনো বেতনভাতা না থাকায় তিনি বর্তমানে ইউএনও অফিসে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। ইউএনও অফিস থেকে কর্মকর্তাগণ ব্যক্তিগতভাবে তাকে সামান্য কিছু সম্মানি প্রদান করেন ।
স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তি মো. ইউসুফ আলী আকন বলেন, ‘এটির সভাপতির দায়িৎবে আছেন ইউএনও। ভবনে চুরি হওয়া এবং এটি সরকারিভাবে দেখভালের জন্য বহুবার পূর্বের ইউএনওদের কাছে মৌখিকভাবে আলাপ করা হয়েছে। তবে কোনো সুরাহা হয়নি।’
সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. দেলোয়ার সিকদার বলেন, ‘দুই ধাপে প্রায় সোয়া কোটি টাকা খরচ করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে একজন নৈশপ্রহরী থাকলে ভবনটির এমন অবস্থা হতো না।’
এ বিষয়ে উপজেলা ও পৌর প্রশাসক ইউএনও রেহেনা আক্তার জানান, ভবনটিতে সরকারিভাবে কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা নৈশপ্রহরী না থাকার ফলে রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। আর ওখানে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ না থাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তৎৎবাবধান করাও সম্ভব হয় না। তবে এটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করার পাশাপাশি সরকারিভাবে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা নৈশপ্রহরী নিয়োগ প্রদান করা প্রয়োজন। তা হলে এটি ব্যবহার উপযোগী হবে। সূত্র ও ছবি: দৈনিক ইত্তেফাক




