মামার বদলে কারাগারে ভাগনে, যশোরের কারাফটকে ধরা ‘আয়নাবাজি’

অনলাইন ডেস্ক: যশোরের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন এক যুবক। এজলাস শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরে আসামি সেজে আদালতে হাজিরা দেওয়া সেই যুবককে প্রিজনভ্যানে কারাফটকে নিয়ে ঠিকানা যাচাই-বাছাইকালে বেরিয়ে আসে ভিন্ন ঘটনা।

অপরাধধর্মী থ্রিলার চলচ্চিত্র ‘আয়নাবাজির’ আরেক ঘটনা যেন ধরা পড়ে কারাফটকে। গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এ ঘটনা ঘটেছে।

করা কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত তার মামার পক্ষেই আসামি সেজে এসেছিলেন ওই যুবক।

আসামি সেজে আাসা ওই যুবকের নাম মো. শামীম আহম্মেদ (২৭)। তিনি যশোর সদর উপজেলা ভেকুটিয়া গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। শামীম তার আপন ছোট মামা হাসানের পক্ষে আসামি সেজে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে প্রকৃত আসামি হাসান বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মন্টুর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলা বড় ভেকুটিয়া গ্রামের হাসানের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায়। কোতোয়ালি থানার ওই মামলা নম্বর -২৪; জি.আর-৯৩১/; ধারা-৪৪৮/৩২৩ ৩৫৪/৩৮৪/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ দ. বি.। এই মামলায় হাসান সেজে তার পক্ষে তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দেন শামীম। মঙ্গলবার শামীম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে আসামি হাসানের পরিবর্তে কারাগারে পাঠানো হয় শামীমকে।

এদিকে, শামীম কারাগারে যাওয়ার পর আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আসামির নাম, পিতার নাম, ঠিকানা যাচাইয়ের সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে কারাগারে তার ফিঙ্গার প্রিন্টে (এনআইডি নং-১৯৫৫১৪৭৪৪০) প্রকৃত নাম মো. শামীম আহম্মেদ শনাক্ত হয়।

কারা সূত্র আরও জানিয়েছে, শামীম জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে হাসান তার আপন ছোট মামা। হাসানের পরিবর্তে সে আসামি সেজে এসেছে। মামার পরিবর্তে সে তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দিয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ জানান, নিশ্চিত হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে আদালতে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Related Articles

Back to top button