রিয়াল নিচ্ছে না, ব্রাজিল ডাকছে না; পাঁচ মাস মাঠের বাইরে এনদ্রিক

অনলাইন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে রিয়াল মাদ্রিদ ১৯ অক্টোবর লা লিগায় খেলবে হেতাফের বিপক্ষে। সেই ম্যাচেও যদি দলে সুযোগ না পান এনদ্রিক, তবে তার মাঠের বাইরে কাটানো সময় ছুঁয়ে ফেলবে ১৫৪ দিন—প্রায় পাঁচ মাস!
মাত্র ১৯ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সর্বশেষ খেলেছিলেন ১৮ মে, সেভিয়ার বিপক্ষে আগের মৌসুমের শেষদিকে। এরপর অনেক কিছুই বদলে গেছে রিয়ালে—নতুন কোচ হিসেবে এসেছেন জাবি আলোনসো, এনদ্রিক পেয়েছেন কিংবদন্তিদের ৯ নম্বর জার্সি, দুবার চোটে পড়েছেন, এমনকি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে তাকে ঘিরে গুঞ্জনও উঠেছিল। তবু তিনি বার্নাব্যু ছাড়েননি।
এর মধ্যে তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক বিরতিও কাটছে তার বাইরে থেকে। মার্চে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪–১ গোলে হারের ম্যাচেই শেষবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তুলেছিলেন তিনি। এরপর কোচ পরিবর্তন হলেও নতুন কোচ আনচেলত্তির অধীনে ফেরার সুযোগ হয়নি এনদ্রিকের।
এনদ্রিকের গোল উদ্যাপন
রিয়ালের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, আলোনসো তাকে শুরুতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন—এই মৌসুমে জায়গা পাওয়া সহজ হবে না। তবে কোচের আস্থা ধরে রাখতে অনুশীলনে নিয়মিত পরিশ্রম করছেন এনদ্রিক। সর্বশেষ ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে স্কোয়াডে থাকলেও মাঠে নামানো হয়নি তাকে। আলোনসো বলেছেন, ‘ওর জায়গায় এখন প্রচুর প্রতিযোগিতা। তবে সময় আসবে ওরও।’
রিয়াল মাদ্রিদ তাকে ৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো দিয়ে কিনেছিল পালমেইরাস থেকে, সঙ্গে আরও ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরোর বোনাসের শর্ত। প্রথম মৌসুমে পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালোই ছিল—৩৭ ম্যাচে ৭ গোল, রদ্রিগোর সমান, ভিনিসিয়ুসের চেয়ে ৩টি বেশি। কিন্তু মিনিটের হিসেবে তিনি অনেক পিছিয়ে ছিলেন।
আনচেলত্তির সময়েও তরুণদের সুযোগ সীমিত ছিল। নতুন কোচ আসার পর অনেকে ভেবেছিলেন, হয়তো এবার পরিবর্তন আসবে। কিন্তু এনদ্রিকের ভাগ্য সেদিকে সহায় হয়নি। মে মাসে সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেই প্রথমবার মাংসপেশির চোট পান, এরপর ক্লাব বিশ্বকাপের দলে জায়গা হয়নি। তার অনুপস্থিতিতে তরুণ স্ট্রাইকার গঞ্জালো গার্সিয়া দারুণ পারফরম্যান্স দেখান, যা এনদ্রিকের অবস্থানকে আরও দুর্বল করে দেয়।
এরপর জুনে চোট সারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-মৌসুম ক্যাম্পে যোগ দেন তিনি। কিন্তু প্রথম দিনই ফের চোট! কয়েক মাস মাঠের বাইরে থেকে অবশেষে সেপ্টেম্বরে ফিট হয়ে ফেরেন। কিন্তু এরপরও লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে বেঞ্চে বসেই সময় কাটাতে হয় তাকে।
এই সময়েই বিয়ে করেন প্রেমিকা গাব্রিয়েলি মিরান্দাকে, জাপানে কাটান হানিমুন, সঙ্গে নেন ব্যক্তিগত ট্রেনারকেও—চোটমুক্ত হয়ে দ্রুত ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাঠে ফেরার প্রতীক্ষা আজও শেষ হয়নি।
বিয়ের পর এনদ্রিক ও মিরান্দা
আন্তর্জাতিক দলেও ডাক না পাওয়ায় এখন তার বিশ্বকাপ-স্বপ্নও অনিশ্চিত। একসময় যাকে বলা হচ্ছিল ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদের নতুন বিস্ময়বালক, সেই এনদ্রিক এখন কঠিন এক বাস্তবতার মুখে।
তবু হাল ছাড়েননি তিনি। কোচ আলোনসো বলছেন, ‘প্রতিভা ও নিবেদন দুটোই আছে ওর মধ্যে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।’
এনদ্রিকও জানেন, পরেরবার সুযোগ এলে শুধু মাঠে নামলেই হবে না—প্রমাণ করতে হবে, কেন তাকে নিয়ে এত আশা।