মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ: থেমে থেমে গুলির শব্দ, সীমান্তে আতঙ্ক

অনলাইন ডেস্ক: বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া তীব্র গোলাগুলির শব্দে সীমান্তবর্তী এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, রাত ১১টার পর থেকে গুলির শব্দ শুরু হয়ে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে চলতে থাকে।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পশ্চিমপাড়া ও উখিয়ার থাইংখালী এলাকার বাসিন্দারা বলেন, রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ সবচেয়ে তীব্র ছিল। স্থানীয় শিক্ষক বাশার জানান, “রাতে প্রচুর গুলির শব্দ শুনেছি। ওপারে বড় ধরনের সংঘর্ষ চলছে মনে হচ্ছে। এমন শব্দ আগে শোনা যায়নি। সবাই আতঙ্কে আছে।”

স্থানীয় সূত্র ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী ও রাখাইন বিদ্রোহী সংগঠনের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে দাবি করা হয়েছে, সংঘর্ষের গুলিতে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৭ বছর বয়সী ইয়াসের নামে এক রোহিঙ্গা কিশোর আহত হয়েছেন। তবে এখনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস. এম. খায়রুল আলম পিএসসি এবং ৬৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, “ঘটনাটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। বাংলাদেশের ভেতরে গুলি আসার সম্ভাবনা নেই। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি এবং নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”

রোহিঙ্গা আহত প্রসঙ্গে বিজিবি কর্মকর্তারা আরও জানান, “বাংলাদেশের ভেতরে কোনো গুলি এসেছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল সীমান্তের ১২ নম্বর ক্যাম্প এলাকা থেকে অনেক দূরে।”

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আরাকান আর্মি গত দেড় বছর ধরে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা রাখাইনের অধিকাংশ এলাকা ও ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নিলেও সংঘর্ষ এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা সীমান্তজুড়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

Related Articles

Back to top button