গাইবান্ধায় বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক, সাত দিনে ১১ জন আক্রান্ত

অনলাইন ডেস্ক: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ছাগলের হাড়ে আঘাত পেয়ে আজেনা বেগম রোজিনা (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, তিনি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আগে থেকে থাকা নানা শারীরিক জটিলতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আজেনা বেগম। পরদিন রোববার বেলকা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা গ্রামের দকিদার মোড়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

স্বজন ও এলাকাবাসীর ভাষ্য, আজেনা বেগম একটি অসুস্থ ছাগলের বাচ্চা জবাইয়ের সময় হাড়ের আঘাতে হাতে ক্ষত পান। পরে ক্ষতস্থানে ফোঁসকা দেখা দিলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নেন। অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রংপুর মেডিক্যালে নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, ‘মৃত নারী নিজেই অসুস্থ ছাগল জবাই করার সময় আঘাতপ্রাপ্ত হন। অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়, কারণ পরীক্ষা করা হয়নি।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার ইউনিয়নে অন্তত ১১ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন, এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক বলেন, ‘ওই নারীর হাতে ছোট দুটি ফোঁসকা ছিল, রক্তচাপ কমে গিয়েছিল এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। তাই তাকে রংপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে হয়েছে কি না তা নমুনা পরীক্ষার পর জানা যাবে।’

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গত এক সপ্তাহে অন্তত ২৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে।

স্থানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে টিকাদান, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক সভা চলছে। আক্রান্ত পশু জবাই না করার নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, রোজিনার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে নয়; তিনি আগে থেকেই বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। সাধারণ মানুষকে গুজব ও বিভ্রান্তি থেকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

Related Articles

Back to top button