আঠাশ বছরেও সংস্কার হয়নি পাথরঘাটার ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯ সেতু

অনলাইন ডেস্ক: বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯টি সেতু দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন হাজারো মানুষ। এসব সেতু ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে নির্মিত হলেও ২৮ বছরেও সংস্কারের মুখ দেখেনি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্মিত শতাধিক সেতুর মধ্যে সংস্কারের অভাবে ৩৯টি এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি সেতু ভেঙে খালে পড়ে আছে। ফলে এসব এলাকায় চলাচল করতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা। প্রতিনিয়ত এসব সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন শিশু, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাচনাপাড়া বাজারের উত্তরপাশে মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার সংযোগ সড়কে কাঠের ব্রিজটি দীর্ঘদিন আগে ভেঙে যায়। পরে এলাকাবাসীরা নিজ উদ্যোগে একটি সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করছিলেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জোয়ারের চাপে নাচনাপাড়া বাজারের উত্তর পাশে স্থানীয়দের তৈরি কাঠের সাঁকোটি ভেঙে পড়ে। অন্যদিকে নাচনাপাড়া বাজারের দক্ষিণ পাশে বেড়ি বাঁধ জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে যাওয়ায় দুই মাস আগে নৌবাহিনী ও উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিলে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন কিন্তু সেটিও গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রবল জোয়ারের স্রোতে ভেঙে পড়ে। এতে তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সেখানে দ্রুত স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
পাথরঘাটা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় লোহার ও পাকা মিলিয়ে প্রায় শতাধিক সেতু রয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ৩৯টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৩৫৮ দশমিক ৫ মিটার।

রূপধন এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সোহেল রানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এই সেতুটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। এখানে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়। যদি সেতুটি দ্রুত নির্মাণ না করা হয়, তবে কৃষকদের কম দামে আলু বিক্রি করতে হবে।
পাথরঘাটা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরন মন্ডল জানান, উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯টি সেতুর তালিকা করা হয়েছে। এগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য বাজেট আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে। এসব সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে কোনো সতর্কবার্তা টানানো আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি জানান, তার যোগদানের পর থেকে এসব সেতুতে কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া হয়নি। তবে তার আগে হয়তো কিছু সেতুতে সাইনবোর্ড দেওয়া ছিল।