ক্রিকেটে পাকিস্তানের ওপর আবারও ভারতের একপেশে জয়

অনলাইন ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের উন্মাদনার কমতি না থাকলেও মাঠের খেলায় সেই উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। গত কয়েক বছর ধরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুটি দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলাফল যেন একই ধরনের একপেশে লড়াই।
এবারের এশিয়া কাপের আগেও দুই দলের এই মহারণ ঘিরে অনেক উত্তেজনা ছিল। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত সেই উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মাঠের খেলায় পাকিস্তানকে আবারও হতাশ করে বড় জয় তুলে নিয়েছে ভারত।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জাসপ্রিত বুমরাহ এবং কুলদীপ যাদবের সামনে পাকিস্তানের ব্যাটাররা দাঁড়াতেই পারেননি। ব্যাটিং ব্যর্থতার এই দিনে শাহিন আফ্রিদি শেষের দিকে দারুণ একটি ক্যামিও খেলেন। তার ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান ১২৭ রানের একটি সাধারণ পুঁজি গড়ে। জবাবে সূর্যকুমার, অভিষেক এবং তিলক ভার্মার ব্যাটে ভর করে ভারত ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে। এই জয়ের ফলে টানা দুটি জয় নিয়ে সূর্যকুমার যাদবের দল সুপার ফোরে এক পা দিয়ে রেখেছে।
১২৮ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুভমান গিল দারুণ শুরুর আভাস দিলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। সাইম আইয়ুবের টানা দুটি বলে চার মারার পর স্টাম্পড হয়ে তাকে সাজঘরে ফিরতে হয়। গিলের বিদায়ের পর আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মা ঝড় তোলেন। তিনি কেন আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর ব্যাটসম্যান, তা যেন মাঠে নেমেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। প্রথমে শাহিন আফ্রিদিকে লক্ষ্য করে তিনি তার প্রথম ওভারে একটি চার এবং একটি ছয় মারেন, এরপর তার দ্বিতীয় ওভারেও একটি চার এবং একটি ছয় মারেন এই বাঁহাতি ওপেনার। আফ্রিদির পর আইয়ুবের ওপরও চড়াও হয়েছিলেন অভিষেক। ওভারের প্রথম তিন বলে দুটি চার মারেন। শেষ পর্যন্ত ফাহিম আশরাফের হাতে লং অফে ধরা পড়ার আগে তিনি ১৩ বলে ৩১ রান করেন।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দশ ওভারেই ভারত ৮৮ রান তুলে ফেলে, যা তাদের জয়ের পথ পরিষ্কার করে দেয়। দলের বাকি কাজটুকু শেষ করেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক ভার্মা। ১৫.৫ ওভারেই ভারত ম্যাচটি জিতে নেয়। ৩৭ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত থাকেন সূর্য। অন্যদিকে, পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে একমাত্র সাফল্য পেয়েছেন সাইম আইয়ুব, যিনি ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। একাই তিনটি উইকেট শিকার করেন তিনি।
এর আগে দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন শাহিবজাদা ফারহান। এছাড়া শাহিন আফ্রিদি অপরাজিত ৩৩ রান করেন। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম বৈধ বলেই তারা উইকেট হারায়। হার্দিক পান্ডিয়ার করা অফ স্টাম্পের বাইরের কিছুটা শর্ট লেংথের বলে সাইম আইয়ুব বৃত্তের ভেতরে দাঁড়ানো ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় পয়েন্টে বুমরাহর হাতে ধরা পড়েন তিনি।
তিনে নেমে মোহাম্মদ হারিস দলের বিপদ আরও বাড়ান। এই টপ অর্ডার ব্যাটার বুমরাহর পেস এবং সুইংয়ের সামনে অসহায় ছিলেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বুমরাহর বলে হার্দিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি সাজঘরে ফেরেন। ফিরে যাওয়ার আগে ৫ বলে ৩ রান করেন হারিস। ৬ রানে দুটি উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেছিলেন ফারহান এবং ফখর জামান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার পরও ফখর জামান একটি বাজে শটে উইকেট হারান। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার ১৫ বলে ১৩ রান করেন। এরপর সালমান আলি আগা, হাসান নাওয়াজ এবং মোহাম্মদ নাওয়াজও আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন। এক প্রান্তে এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝেও আরেক প্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করেছেন ফারহান। এই তরুণ ওপেনার ৪৪ বলে ৪০ রান করেন।
ফারহান আউট হওয়ার পর অনেকেই পাকিস্তানের ইনিংসের এখানেই শেষ ভেবেছিলেন। কিন্তু শাহিন আফ্রিদি তা হতে দেননি। তিনি আরও একবার তার পাওয়ার হিটিংয়ের সক্ষমতার প্রমাণ দেখিয়ে ১৬ বলে চারটি ছক্কা মেরে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।