শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠদিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

অনলাইন ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠদিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বুধবার (২০ আগস্ট) মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিশনের আনা ১৩তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
এর আগে সোমবার (১৮ আগস্ট) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পঞ্চমদিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ আগস্ট দিন ধার্য করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মামলায় আজ ষষ্ঠদিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে, এর মধ্যে কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। মোট তিনজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন।
জবানবন্দিতে এই তিনজনই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
জবানবন্দি শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাক্ষীদের জেরা করেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
এ পর্যন্ত এই মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর আগে গত ১৭ আগস্ট সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
এর আগে গত ৬ আগস্ট রিনা মুর্মু ও একেএম মঈনুল হক নামে দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য দেন।
গত ৪ আগস্ট পঙ্গু শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর পারভীন সাক্ষ্য দিয়ে নিজেদের দুর্দশার জন্য শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে গত ৩ আগস্ট জবানবন্দি দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এরও আগে গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
প্রসিকিউশন এই তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার বিশাল এই অভিযোগপত্রে তথ্যসূত্র, জব্দ তালিকা, দালিলিক প্রমাণ এবং শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষী রয়েছেন।