‘আমি তো এমনিতে জাহান্নামি, মরার কারণ পান্না’

অনলাইন ডেস্ক: পিরোজপুরের নাজিরপুরে নাসরিন আক্তার (১৬) নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নাসরিনের ঘর থেকে দেড় পৃষ্ঠার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়, যেখানে প্রেমিক পান্না শিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিচার দাবি করেছে সে।

নাসরিনের ভাগনে জানান, ‘নাসরিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল পান্না শিকদারের। তিনি লতিফ শিকদারের একমাত্র ছেলে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নাসরিনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। কিন্তু পরে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। এ কারণেই নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি বেলা ১টার দিকে খবর পেয়ে দোকান থেকে এসে দেখি, মারা গেছে। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। আমরা এর বিচার চাই।’

নাসরিনের ভাবি বলেন, ‘পান্না শিকদারের বিরক্তি ও হুমকির কারণে নাসরিন অনেক দিন স্কুলে যেতে পারেনি। খারাপ কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। বিয়ে না করার সিদ্ধান্তের কারণে সে আত্মহত্যা করেছে। আমরা এর বিচার দাবি করছি।’

চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি মরার কারণ হলো লতিফ শিকদারের একমাত্র ছেলে পান্না শিকদার। সে আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার দেহ ভোগ করেছে। আমার শেষ ইচ্ছা, ওর এমন সাজা হোক, যাতে আমার মতো আর কারও জীবন না নষ্ট করতে পারে। বাবা এবং ভাই ও বোন, পারলাম না তোমাদের কথা রাখতে। আমাকে মাফ করে দিও। আমি বিয়ে করলেও কোনো দিন সুখী হতাম না। আমি তো এমনিতে জাহান্নামি। আর মা, আমি নাই তো কি হইছে। আরও তো ভাই-বোন আছে। আমাকে বিয়া দিবা না, মনে করবা আমি শ্বশুরবাড়ি। কান্না করবা না একটুও। আমার বুকে না অনেক কষ্ট। তাই আর সহ্য করতে পারলাম না। পান্নার জন্য কি না করছি, কিন্তু ও মিথ্যা অপবাদ দিল। আমি না সারা বেড়ার সঙ্গে কথা কই। তাই হলে ওর কাছে বারবার যেতাম না। বিদায় সবাই, ভালো থাকো। ওর জন্য আমার অনেক কথা শুনতে হইছে। আমি ওর উচিত শিক্ষা চাই। good bye’

ঘটনার পর একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও পান্না শিকদার (২৪) ও তার পরিবারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button