সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি- উপজেলা প্রশাসন

অনলাইন ডেস্ক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন।

গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে করা একটি ফেসবুক পোস্ট আমাদের নজরে এসেছে। পোস্টটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, পোস্টটিতে দাবি করা হয়েছে যে, এ বিষয়ে আজ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে কেউ কোনো যোগাযোগ করেনি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থিত বিভিন্ন মন্দির উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা নিয়মিত এ পাহাড় ও মন্দিরসমূহে দর্শন ও পূজা-অর্চনার জন্য আগমন করেন।

এতে আরও বলা হয়, সীতাকুণ্ড উপজেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখানে সকল ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে আসছে। পবিত্র তীর্থস্থানটির প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ, অনুভূতি ও আবেগকে সীতাকুণ্ডবাসী গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান দিয়ে থাকে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে এমন কোনো কর্মকাণ্ডকে সীতাকুণ্ডবাসী কখনোই সমর্থন করে না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং সেখানে মসজিদ নির্মাণের কোনো উদ্যোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।

এতে বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব, প্রোপাগান্ডা বা অপপ্রচার ছড়িয়ে সীতাকুণ্ডে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তির শেষে বলা হয়, সবাইকে অনুরোধ করছি, আমাদের সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন। ধর্ম-বর্ণের ভিন্নতা যেন বিভেদের কারণ না হয়ে ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। আসুন, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের সুন্দর উদাহরণ গড়ে তুলি।

এদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে চন্দ্রনাথ ধাম মন্দির পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড-সন্দীপ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবিব আব্দুল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান, স্রাইন কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র চক্রবর্তী, সদস্য মৃদুল অধিকারী, পুরোহিত দেবাশীষ ভট্টাচার্য ও বনবিভাগের স্টাফ মোস্তাফিজসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে— এমন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি পোস্ট ভাইরাল হয়। এর জেরে ব্যাপারটি সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক মাধ্যমেও প্রকাশ করে সীতাকুন্ড উপজেলা প্রশাসন।

Related Articles

Back to top button