পোর্টল্যান্ডে সেনা পাঠানোর নির্দেশ ট্রাম্পের, প্রয়োজনে ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারের অনুমতি

অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ড শহরে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রয়োজনে সেখানে ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারেরও অনুমতি দিয়েছেন তিনি।
বিবিসি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘পোর্টল্যান্ডে আমাদের আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কেন্দ্র আছে। আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিচ্ছি, অ্যান্টিফা ও অন্যান্য দেশীয় সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে এটিকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সেনা সরবরাহ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রয়োজনে পূর্ণ শক্তি ব্যবহারেরও অনুমোদন দিচ্ছি।’
সেনা মোতায়েনের কারণ হিসেবে তিনি ফেডারেল ভবন ও শহরের জননিরাপত্তার ওপর ‘হুমকি’র কথা উল্লেখ করেছেন।
এদিকে এই ঘোষণার পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তারা বলেন, শহরে সেনা মোতায়েনের কোনও প্রয়োজন নেই।
ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক বলেন, পোর্টল্যান্ডে কোনও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি নেই। আমাদের সম্প্রদায় শান্ত ও নিরাপদ।
এক সংবাদ সম্মেলনে কোটেক বলেন, যেকোনও মোতায়েন ক্ষমতার অপব্যবহার হবে।
তিনি আরও জানান, ওরেগনের অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যান রেইফিল্ডের সঙ্গে সমন্বয় করছেন কোনও প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন কিনা তা দেখতে।
তবে ট্রাম্পের পোস্টে উল্লেখ করা হয়নি, তিনি জাতীয় রক্ষী (ন্যাশনাল গার্ড) বাহিনী নাকি নিয়মিত মার্কিন সেনা মোতায়েন করতে চান। পূর্ন শক্তি ব্যবহারের অর্থও পরিষ্কার করা হয়নি।
পেন্টাগনের প্রধান মুখপাত্র শন পারনেল বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্টের নির্দেশে পোর্টল্যান্ডে ডিএইচএস কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত রেখেছি। বিভাগ প্রয়োজনমতো তথ্য ও আপডেট দেবে।’
ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এল, যখন অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে কিছু শহরে সেনা মোতায়েন আরও বাড়ানো হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে পোর্টল্যান্ডের দক্ষিণ জলতটে অবস্থিত ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) ভবনের বাইরে নিয়মিতভাবে ফেডারেল এজেন্ট ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান চলছে। প্রতিদিনই বিক্ষোভকারীরা ওই স্থাপনার সামনে জড়ো হচ্ছেন।
ফেডারেল বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ার খবরে স্থানীয় নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করে আসছেন এবং ভবনটি বন্ধ করারও দাবি তুলেছেন। শহর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অনুমোদিত নীতিমালার বাইরে সেখানে রাতারাতি আটক রাখার কারণে ওই স্থাপনাটি ভূমি ব্যবহার বিধি লঙ্ঘন করছে।
ট্রাম্প ঠিক কোন সামরিক বাহিনী পাঠাবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এর আগে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছিলেন এবং মেমফিস, টেনেসিতেও পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের প্রতিবাদে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে মেরিন সেনাও পাঠিয়েছিলেন।
দেশের ‘উগ্র বামপন্থীদের’ বিরুদ্ধে প্রচার জোরদারের অংশ হিসেবে ট্রাম্প বারবার পোর্টল্যান্ডকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন। প্রায় ২৫ লাখ মানুষের এ শহরের বিরুদ্ধে তিনি পদক্ষেপ নেবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।