মৃত্যুর মুখোমুখি জেনেও জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা বিদেশ পালায়নি- এটিএম আজহারুল

অনলাইন ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, কোরআন বিরোধী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অধীনেই আমাদের প্রথম সারির নেতাদের বিনা অপরাধে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর মুখোমুখি জেনেও নেতৃবৃন্দ দেশেই ছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না বলেই আন্দোলন মুছতে পারেনি। পূর্বে বিরোধিতা করে অনেকেই ধ্বংস হয়েছে।
তিনি বলেন, রক্তের বদলা নিতে আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে কাজ করে যেতে হবে। বিজয় ছিনিয়ে নিতে হবে। আগামীতে ইসলামী শক্তি ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।
গতকাল শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে পাবনা বনমালী ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে পৌর ও সদর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, শেখের বেটি সব সময় বলত তারা নাকি পালায় না। তিনি আজকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী এতিমের মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিদেশে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। আমরা কি পালিয়েছি? নিশ্চয়ই আমরা দেশেই আছি। ফাঁসির মঞ্চে হাসিমুখে গিয়েছি। তবুও বিদেশ পালায়নি।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে ইসলাম কায়েম হয় না। সত্যিকার ইসলাম বিজয় করতে হলে রাসুলের (সা.) আদর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। মানুষদের মন জয় করতে হয় আচরণ ও চরিত্র দিয়ে। দল বড় হচ্ছে, জনশক্তি বাড়ছে। আমাদের বিনয়ী হতে হবে। যাতে আমাদের চরিত্র দেখে মানুষ দূরে সরে না যায়। জীবন্ত কোরআন হতে হবে। রাজনৈতিক বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী হয় না। চারিত্রিক বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী হয়। আমাদের নেতারা জীবন্ত কোরআন ছিলেন। কারণ দুর্নীতি অনিয়ম তাদের গ্রাস করতে পারেনি। কারও সীমা অতিক্রম করা যাবে না। জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে লড়তে হবে।
পাবনার কৃতী সন্তান মাওলানা আব্দুস সোবহানের স্মৃতিচারণ করে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আব্দুস সোবহান আমার থেকে ১৫ বছরের বড়। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষ নেতা হয়েছেন। ইউপি সদস্য থেকে ৫ বারের এমপি হয়েছিলেন। তার মধ্যে কোনো অহংকার গর্ব ছিল না। তার অসংখ্য বাড়ি-গাড়ি জমি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। পাবনার বুকে অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান করে গেছেন। বৃদ্ধ বয়সেও হাসিনা ফ্যাসিস্ট তাকে ডাণ্ডা বেড়ি পরিয়েছিলেন। আল্লাহ অবশ্যই ওই জালিমের বিচার করবেন।
এর আগে সকালে তিনি ঢাকা থেকে পাবনার সাঁথিয়ার শ্বশুর বাড়িতে এসে শ্বশুরের কবর জিয়ারত করেন। এরপর দুপুরের দিকে জামায়াতের সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সাঁথিয়ার মনমথপুরের কবর জিয়ারত করেন। বিকেল ৩টার দিকে আরিফপুর সদর কবরস্থানে সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সোবহানের করব জিয়ারত করেন। পরিশেষে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করেন ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন।
পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো. ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সদর জামায়াতের সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল আইনুল এবং পৌর সহকারী সেক্রেটারি ইকরাম হোসাইনের সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুর রহিম, সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজীবুর রহমান মোমেন, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক নজরুল ইসলাম খান, নায়েবে আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুস সুবহানানের ছেলে নেছার আহমেদ নান্নু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান প্রমুখ।
এছাড়াও বক্তব্য দেন পাবনা শহর শিবিরের সভাপতি গোলাম রহমান জয়, পাবনা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, পাবনা পৌর জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল লতিফ, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রব প্রমুখ।