বিপন্ন শুশুক মারা যাওয়ার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহারই দায়ী

অনলাইন ডেস্ক: দেশে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে শুশুক অন্যতম। দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা সময়ে মারা পড়ছে শুশুক। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুশুক মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে কারেন্ট জালের ব্যবহার। ৮৭ শতাংশ দায়ী এই জালের ব্যবহার। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে ডলফিন শিকার করা হয় তেল ও ওষুধ তৈরির জন্য।
এবার শুশুক রক্ষায় সরকারকে নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। এতে বলা হয়েছে, নদীর বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খল টিকিয়ে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা বহন করে শুশুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। এসব প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। একই সঙ্গে শুশুক শিকার ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে নোটিশে। বিশ্বে বর্তমানে শুশুক প্রজাতি বিপন্নের পথে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে বিদ্যমান শুশুকের এক-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশে রয়েছে। যার মধ্যে সুন্দরবনে প্রায় ২২৫টি, পদ্মা-যমুনায় প্রায় ২০০টি। কর্ণফুলী, সাঙ্গু, রূপসা, সুরমা, হালদাসহ অন্যান্য নদীতে রয়েছে ৫০০টি শুশুক।
আইইউসিএন বলছে, জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে শুশুকের গুরুত্ব অপরিসীম। শুশুকের খাদ্য হিসেবে অসুস্থ ও দুর্বল প্রজাতির মাছ গ্রহণ জলজ পরিবেশের সুস্থতা ঠিক থাকে। ফলে মাছসহ কাছিম, ভোঁদড় ও ঘড়িয়ালের মতো জলজ প্রাণী সুরক্ষিত থাকে।
এদিকে বেলা বলছে, দুঃখের বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন কারণে শুশুকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। মৃত শুশুক ভেসে এসে তীরে পড়ে থাকার খবর প্রায় প্রচার হয় দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। শুশুক বিপন্নের কারণ হিসেবে অবৈধভাবে মাছ ধরা, কারেন্ট জালের ব্যবহার, আবাসস্থল ধ্বংস, পানি দূষণ, বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, অতিমাত্রায় নৌযান চলাচল, জাহাজের প্রপেলারের সঙ্গে সংঘর্ষ ইত্যাদি বিষয়কে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে গবেষকদের মতে, শুশুক মারা যাওয়ার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহার ৮৭ শতাংশ দায়ী।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ২৯ জুলাই রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে প্রায় এক মণ ওজনের একটি শুশুক ধরা পড়ে। খাদ্য হিসেবে শুশুকের চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র এর তেল দিয়ে বড়শিতে মাছ ধরার জন্য শুশুকটি নদীতে তাত্ক্ষণিক ছেড়ে না দিয়ে আটক করা হয়। পরে দৌলতদিয়া ঘাটে মাত্র ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।