‘শনির দশায়’ এয়ার ইন্ডিয়া, ৪৮ ঘণ্টায় ৩টি উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি

অনলাইন ডেস্ক: টানা দুর্ঘটনার ধাক্কায় যেন ‘শনির দশা’ চলছে এয়ার ইন্ডিয়ার। মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় সংস্থাটির তিনটি উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) হংকং থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইট এআই-৩১৫-এর অক্সিলারি পাওয়ার ইউনিটে (এপিইউ) আগুন ধরে যাওয়ায় ফের প্রশ্ন উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে।
বিমানটি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর যাত্রী নামানোর সময় এপিইউতে আগুন ধরে যায়। যদিও এতে কেউ হতাহত হননি বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতিতে বলা হয়, যান্ত্রিক ত্রুটি শনাক্তের পর বিমানের এপিইউ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং যাত্রীরা নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও এয়ারবাস এ৩২১ মডেলের উড়োজাহাজটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদন্তের জন্য সেটিকে গ্রাউন্ড করে রাখা হয়েছে এবং ঘটনার তথ্য ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে জানানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার কোচি থেকে মুম্বইগামী একটি ফ্লাইট অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে খানিকটা সরে যায়, যার ফলে বিমানের ইঞ্জিন কাভার এবং রানওয়ের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই দিনে দিল্লি থেকে কলকাতাগামী আরেকটি ফ্লাইট টেক-অফের ঠিক আগে ১৫৫ কিলোমিটার গতিতে থাকা অবস্থায় উড্ডয়ন স্থগিত করে।
শুধু গত মাসেই নয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একাধিকবার যান্ত্রিক ত্রুটির মুখে পড়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে গত ১২ জুন। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইট এআই-১৭১ উড্ডয়নের মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মাথায় ভেঙে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৭৪ জন, যাদের মধ্যে ১৯ জন ছিলেন ঘটনাস্থলের একটি ছাত্রাবাসে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান একমাত্র যাত্রী।
দুর্ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএইবি) জানায়, ফ্লাইটটি উড্ডয়নের পর হঠাৎ করে জ্বালানি সরবরাহ সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’-এ চলে যায়, যা সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্ভব নয়। এই সন্দেহ থেকেই ডিজাইনে কোনো ক্রটি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ভারতে নিবন্ধিত সব বোয়িং উড়োজাহাজে জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা পরীক্ষাগুলো শেষ করেছে এবং কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মুরলিধর মোহল জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের পাঁচটি নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। এসব ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে নয়টি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।