ওবামাকে গ্রেপ্তারের কৃত্রিম ভিডিও পোস্ট করে ট্রাম্প: আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়

অনলাইন ডেস্ক:যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে গ্রেপ্তারের একটি এআই-জেনারেটেড ভিডিও পোস্ট করেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২১ জুলাই) এই ভিডিও পোস্ট করে বারাক ওবামার ওপর তার আক্রমণ আরও তীব্র করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা ভিডিওটিতে দেখা গেছে, ভিডিওটির শুরুতে ওবামা বলছেন, বিশেষত প্রেসিডেন্ট আইনের ঊর্ধ্বে। এরপর ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের কণ্ঠে শোনা যায়- আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কৃত্রিমভাবে তৈরি দৃশ্যে দেখা যায়, এফবিআই এজেন্টরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গ্রেপ্তার করছে। একই সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ট্রাম্প পেছনে বসে হাসছেন। ভিডিওর শেষে দেখা যায়, ওবামা কারাগারের ভেতরে কমলা রঙের জাম্পস্যুট পরে দাঁড়িয়ে আছেন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ভিডিওটির কোথাও এটি কাল্পনিক বা এআই-নির্মিত বলে কোনো ধরনের ব্যাখ্যা বা ‘ডিসক্লেইমার’ দেননি। মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে । আর তারপরই বিষয়টি ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ ধরনের একটি পোস্ট করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প এমনটাই বলছেন সমালোচকেরা।
ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটলো যখন কয়েক সপ্তাহ আগে ওবামার বিরুদ্ধে ট্রাম্প ‘উচ্চপর্যায়ের নির্বাচনী জালিয়াতি’র অভিযোগ তোলেন।
এদিকে গত সপ্তাহে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি ঠেকাতে ওবামার সাবেক কর্মকর্তারা ট্রাম্প-রাশিয়া যোগসাজশের তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। এ ব্যাপারে ‘চমৎকার’ এবং ‘অপ্রতিরোধ্য’ প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তিনি ওবামা প্রশাসনের বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।
তুলসি এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছিলেন, আমেরিকানরা অবশেষে সত্য জানতে পারবে যে কীভাবে ২০১৬ সালে, ওবামা প্রশাসনের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিরা গোয়েন্দা তথ্যকে রাজনীতিকরণ এবং অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন, যাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে চলা অভ্যুত্থানের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছিল। এটি আমেরিকান জনগণের ইচ্ছাকে বিকৃত করে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।
তবে, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তর (ওডিএনআই) একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ১১৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর নির্বাচনের আগ পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন ছিল- রাশিয়া সম্ভবত সাইবার উপায়ে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে না।
প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত করা দৈনন্দিন গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ের খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল- রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী পরিকাঠামোতে সাইবার হামলা চালালেও, তা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে সফল হয়নি।