ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক: ব্যাংকগুলোতে আমদানি ব্যয় কমে আসা, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে গত এক সপ্তাহে ডলারের দর প্রায় ২ টাকা ৯০ পয়সা কমে গেছে।

গত সপ্তাহে বেশির ভাগ ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে ১২০ টাকা দরে। কয়েকটি ব্যাংক কিছুটা বেশি দরে কিনলেও দিন শেষে কেউ ১২০ টাকার বেশি দিতে আগ্রহ দেখায়নি। অথচ সপ্তাহের শুরুতে একই ডলারের জন্য ব্যাংকগুলো ১২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত দর প্রস্তাব করছিল।

ব্যাংকাররা বলছেন, বাজারে ডলারের চাহিদা এখন অনেক কম। অনেক ব্যাংক মজুত না রেখে ডলার বিক্রি করে দিচ্ছে। আমদানির এলসি খোলার হার কম, আর রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের গতি ভালো থাকায় বাজারে ডলারের জোগান বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে হঠাৎ করেই ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। মাত্র দুই দিনে বিনিময় হার পৌঁছে যায় ১২৮ টাকায়, যা ছিল নতুন রেকর্ড। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে দর কিছুটা কমে আসে। তখন ১৩টি ব্যাংককে রেমিট্যান্স কেনায় অতিরিক্ত দর দেওয়ার অভিযোগে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তখন বলেছিলেন, ‘বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো বাজারের নিয়ম না মেনে দর বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের ভেতরেই ডলারের দর নির্ধারিত হবে।

এরপর ২০২৪ সালের মে মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করে। অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো নিজেদের মধ্যে দর ঠিক করে লেনদেন করতে শুরু করে। তখন থেকেই ডলারের দর পড়তির দিকে।

ডলারের দর কমার মূল কারণ-চাহিদার ঘাটতি। সরকার ও বেসরকারি খাতে আমদানির জন্য অতিরিক্ত ডলার দরকার নেই। অতীতে সরকারি আমদানির বিল পরিশোধে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বিপুল ডলার সংগ্রহ করেছিল। এখন সেই বিল পরিশোধ সম্পন্ন হওয়ায় আর বাড়তি চাহিদা নেই। আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বর্তমানে দেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির। এর ফলে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিও কমেছে। ফলে ডলারের ওপর চাপ নেই। বাজারে যেটুকু আমদানি হচ্ছে, তার বড় অংশ ভোগ্যপণ্যের, যার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।

তিনি আরো বলেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি থেকে ভালো আয় হচ্ছে। ফলে ডলারের জোগান ভালো থাকায় ভবিষ্যতেও দর আরো কমতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি বাজার থেকে ডলার কিনে নেয়, তাহলে হয়তো দর কিছুটা বাড়তে পারে।

Related Articles

Back to top button