আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট শেখ হাসিনার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী , পরবর্তী পদক্ষেপের ইঙ্গিত

অনলাইন ডেস্ক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সাজা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
গতকাল বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায়ের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, “প্রসিকিউশনের দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে আমার দ্বিমত রয়েছে। এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এর আগে, আদালত অবমাননার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে ছয় মাস এবং শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা, মামলার বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে কিংবা গ্রেপ্তার হলে সেদিন থেকে সাজার সময় গণনা শুরু হবে।
এটাই প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলায় সাজা দিল বাংলাদেশি কোনো আদালত। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এটি প্রথম দেওয়া সাজা।
শুনানিতে শেখ হাসিনা ও শাকিলের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আদালতের বন্ধু (অ্যামিক্যাস কিউরি) হিসেবে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং প্রসিকিউটর তানভীর জোহা।
এর আগে, গত ১৯ জুন, আদালত অবমাননার মামলায় বিচারকরা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অ্যামিক্যাস কিউরি হিসেবে এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে নিয়োগ দেন।
আলোচ্য মামলায়, ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ — এমন একটি অডিও বার্তার সূত্র ধরে শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
৩০ এপ্রিলের শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল তাদের ২৫ মে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলে। কিন্তু তাঁরা নির্ধারিত দিনে হাজির না হওয়ায় এবং কোনো আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা না দেওয়ায়, ট্রাইব্যুনাল সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের পরবর্তী হাজিরার তারিখ ঘোষণা করে। ৩ জুন তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হলেও তাও পালন করা হয়নি।