বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক আহ্বায়কের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলার আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রাশেদ খান। সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ ঘোষণা দেন।

রাশেদ খান লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলার আহ্বায়ক পদ থেকে আমি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিচ্ছি। একইসঙ্গে এনসিপি ও এর ছাত্র কিংবা যুব উইংয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই৷’

তার এই ঘোষণায় হতবাক হয়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কারণ, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-ভিত্তিক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে যখন সারা দেশে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি চলছে, তখনই এল এই পদত্যাগ। রাতেই রাশেদের পোস্টের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

গভীর রাতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রাশেদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে পদত্যাগের কিছুক্ষণ পর এক সহকর্মীর ইনবক্সে তিনি লেখেন, ‘সারাক্ষণ কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি। এসব আর ভালো লাগছে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান
গত বছরের ২৬ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পরিষদ রাশেদ খানকে আহ্বায়ক এবং জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তিকে সদস্যসচিব করে ১০১ সদস্যের যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেয়। তবে ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নৈতিক স্খলনের অভিযোগ তুলে যুগ্ম আহ্বায়ক-১ মাসুম বিল্লাহ পদত্যাগ করেন। এরপর এক সপ্তাহের মধ্যে আরও ৭ জন নেতা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেন।

চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা কমিটি গঠনে অনৈতিকতার অভিযোগে সদস্যসচিব জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তির পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। একাধিক সময়ে কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগও সামনে আসে। এর জেরে বহু নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন, কর্মসূচিতে দেখা যায় না আগের মতো উপস্থিতি।

নেতাকর্মীদের মতে, রাশেদ খান ছিলেন যশোরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম মুখ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বামধারার ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা রাশেদ গত বছর জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সেই ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে যশোর জেলা আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

তার এই হঠাৎ পদত্যাগকে সংগঠনের জন্য ‘ধাক্কা’ হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই বলছেন, রাশেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত আরও ডজনখানেক নেতাকর্মী অচিরেই পদত্যাগ করতে পারেন। সংগঠনের ভেতরে নতুন করে ভাঙনের শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন একাধিক সূত্র।

Related Articles

Back to top button