কোচবিলে মাটি কেটে মৎস্য ঘের, ইউএনও অফিস ঘেরাও করে কৃষকদের বিক্ষোভ

অনলা্ইন ডেস্ক: যশোরের মণিরামপুর জয়পুর কোচবিলে ফসলি জমি ও বিল রক্ষা, পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থার দাবিসহ অবৈধ মৎস্য ঘের নির্মাণের প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।

গতকাল রোববার (২৯ জুন) বেলা ২টার দিকে এ বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে প্রায় দুই ঘণ্টা পর ইউএনও অফিস ত্যাগ করেন বিক্ষুব্ধরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোচবিলে ফসলি জমি কেটে মৎস্য ঘের নির্মাণকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন কৃষকরা। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মৎস্য ঘের মালিকদের দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসার রোববার দুপক্ষকে ইউএনও অফিসে ডাকা হয়। পরে কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা নির্ধারিত সময়ে ইউএনও অফিসে হাজির হন। কিন্তু মৎস্য ঘের মালিকপক্ষের কেউ না আসায় ক্ষুব্ধ হন কৃষক ও এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা ইউএনও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে শুরু করে।

এ সময় আন্দোলনরত কৃষকরা জানান, উপজেলার ঢাকুরিয়া, ব্রাহ্মনডাঙ্গা, হুরগাতী, ভবানিপুর, জয়পুর গ্রামের হাজার হাজার কৃষকের একমাত্র সম্বল কোচবিল। এই বিলে এক শ্রেণির মুনাফাখোর অসাধু ব্যক্তি একের পর এক ফসলি জমি নষ্ট করে মৎস্য ঘের তৈরি করে চলেছে। ফলে ওই বিলের জমির মালিক ও কৃষকরা এই অবৈধ মৎস্য ঘের তৈরির কারণে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরই মধ্যে এনামুল কবীর নামে এক ব্যক্তি ফসলি জমিতে অবৈধভাবে মৎস্য ঘের নির্মাণ করেন। গত তিন মাস আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও এলাকাবাসী জয়পুর কোচরবিলের মাঠে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

পরে কৃষকরা সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থানের এক পর্যায়ে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না ও উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো. নিয়াজ মাখদুম উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি দ্রুত মীমাংসার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা ইউএনও অফিস ত্যাগ করেন।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কৃষক নেতা মনির পাটোয়ারী বলেন, এই অঞ্চলের মানুষ কৃষির উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। অবৈধ ঘেরের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে ফসলহানির পাশাপাশি পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এসব বন্ধে তিন মাস ধরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করে আসছি। কিন্তু কারো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, আমরা কৃষক ও স্থানীয়দের অভিযোগটি শুনেছি। উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Related Articles

Back to top button