‘আ.লীগকে ক্ষমার কোনো সুযোগ নেই’

অনলাইন ডেস্ক: পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একজন ‘কুৎসিত স্বৈরাচার’ আখ্যা দিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আর কখনো সুস্থ ন্যারেটিভ নিয়ে মানুষের সামনে ফিরে আসতে পারবে না। গত ১৫ বছর তারা যে নৃশংস অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা ক্ষমার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণেই প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে কেউ আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতা করতে চাইলে তাদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’ শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসিতে) ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত ‘ক্ষমতার পালাবদলে তরুণ ভোটারদের ভূমিকা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। আগামী নির্বাচন হওয়ার আগে এ দলের বিচার শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কাজেই দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এছাড়া দলটি জুলাই আন্দোলনে ১৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে। তাদের নৃশংস অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ দগদগে ঘায়ের মতো এমনভাবে খোঁচায়, যা স্মৃতিতে আসবেই।’ তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের প্রায় সব নেতাই পালিয়ে গেছেন। ভোটে অংশগ্রহণ দূরে থাক, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ বছরে গুম-খুন, আয়নাঘর সৃষ্টি, অর্থপাচার, ব্যাংক লুট, দুর্নীতি, অনিয়ম-অন্যায়সহ নির্বাচনব্যবস্থাকে কলুষিত করার অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণে যোগ্যতা হারাবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ শেখ হাসিনাসহ তার অনুসারীরা বিচারে শাস্তি হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণরাও দল করেছে। তাদের প্রতি সবার সহানুভূতি আছে। কিন্তু তারা এখনো সবার কাছে যেতে পারেনি। এনসিপির মধ্যে অসংলগ্নতা দেখা যাচ্ছে। তাদের কথায় ও কাজে আরও ঐক্যবদ্ধ ও পরিণত হতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছেÑফেব্র“য়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করা; বিগত নির্বাচনগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নির্বাচন কমিশনার, পুলিশ, প্রশাসন, এসপি ও ডিসিদের বিচারের আওতায় আনা; আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনি পরিবেশ না থাকলে ইসিকে যেকোনো সময় ভোট বন্ধের এখতিয়ার দেওয়া; রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সংগঠনগুলোর সঙ্গেও নির্বাচন কমিশনের এজেন্ডা ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা; নির্বাচনকালীন সন্ত্রাস, ভীতি সঞ্চার বা অন্য কোনো ধরনের নির্বাচনি অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।
ছায়া সংসদে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক কাজী জেবেল, সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন ও সাংবাদিক সাইদুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।