নির্যাতনের বিচার চেয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গৃহবধূ

# পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন

অনলাইন ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর শহরের রথতলা এলাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের হুমকি-ধমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক গৃহবধূ ও তার তিন শিশু সন্তান। মামলার আসামিরা কথিত পুলিশের সোর্স হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত এবং আলমডাঙা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর আলীর সঙ্গে তাদের গভীর সখ্যতার কারণে আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে গত মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তরের আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং সেলে অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতিত ওই গৃহবধু।

লিখিত অভিযোগে ওই গৃহবধূ উল্লেখ করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার পারিবারিক একটি মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন সহযোগিতার অজুহাতে থানার কনস্টেবল এনামুল হক আমার বাসায় আসেন। এক পর্যায়ে আমাকে এনামুল বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতে আলমডাঙ্গা পৌরসভার রথতলা এলাকায় আমার বাসায় এসে মামলা সংক্রান্ত সহযোগিতার কথা বলে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। আমার চিৎকারে আশেপাশের মানুষ এগিয়ে আসলে এনামুল কৌশলে পালিয়ে যান। পরদিন আমি এই ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলে পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর আলী আমার মামলা গ্রহণ না করে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকেন। উপায়ান্তর না পেয়ে আমি চুয়াডাঙ্গার তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিলে তিনি অভিযুক্ত কনস্টেবল এনামুলকে অন্যত্র বদলি করেন। এতে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে তার কতিপয় কথিত সোর্স দিয়ে আমাকে হয়রানি করতে থাকেন। এনামুলের প্ররোচনায় স্থানীয় কথিত পুলিশের সোর্স গুরু দাশের ছেলে মঙ্গল, জাকারিয়ার ছেলে সাচ্চু, দিলীপ কুমারের ছেলে দিপু, গৌর এর ছেলে রিপন সংঘবদ্ধভাবে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ টায় আমার বাসায় প্রবেশ করে আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় এবং ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় আমি চুয়াডাঙ্গা কোর্টে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। পরে আদালতের নির্দেশে ওই মামলা গত ১২ মে আলমডাঙ্গা থানায় নথিভুক্ত করে। পরিদর্শক (তদন্ত) আজগরের সহযোগিতার কারণে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। মামলা তুলে নিতে আসামীরা অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমার তিনটি নাবালক শিশু সন্তান নিয়ে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

এ ব্যাপারে আলমডাঙা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর আলী বলেন, আলমডাঙা পৌরসভা এলাকায় ওই গৃহবধূ মানুষের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করার পর আসামীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করেন। গত ২৫ এপ্রিল তিনি যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন-সেই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি আমরা হাসপাতালে ধর্ষণ পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে বলা হলেও তিনি কখনই এই রিপোর্ট দেননি। তিনি এ ধরনের মামলা করে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলেন। তার দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে এ পর্যন্ত সকল অভিযোগই মিথ্যা বলে পুলিশের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

Related Articles

Back to top button