ইন্দুরকানীতে ব্রিজ ভেঙে ৫ দিন ধরে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ 

অনলাইন ডেস্ক: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় কলারন-সন্ন্যাসী-মোড়েলগঞ্জ-পিরোজপুর আঞ্চলিক সড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় ৫টি বেইলি ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিন এসব ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের শত শত যানবাহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রী সাধারণ।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (১৯ জুন) কয়লা বোঝাই একটি ট্রাকের ভারে চন্ডিপুর ইউনিয়নের মালবাড়ি খালের বেইলি ব্রিজটি বিধ্বস্ত হয়ে খালে পড়ে যায়। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই আঞ্চলিক সড়কে ৫ দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সুন্দরবনের মৎস্য ও বনজীবী, শরণখোলা, মোড়লগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই পথে যাতায়াত করে থাকেন। এ ঘটনার পর থেকে এই সড়কের বাকি চারটি বেইলি ব্রিজ নিয়েও উদ্বেগ বেড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের বেইলি ব্রিজগুলো অনেক পুরনো ও মরিচা পড়া। কোথাও কোথাও ব্রিজের ভেঙে যাওয়া পাত জোড়া দেয়া হয়েছে লোহার পাত দিয়ে। কোথাও বেঁকে গেছে পাটাতন। তাও জোড়া দেয়া হয়েছে নতুন করে।

এই পথে যাতায়াতকারী বলেশ্বর পরিবহনের চালক বাচ্চু মিয়া বলেন, ভারী যান চলাচলের সময় ব্রিজ দুলে উঠে। ফলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই ব্রিজ গুলো স্বল্প প্রস্থ হওয়ায় একই সাথে দুটি বাস বা ট্রাক ব্রিজ থেকে যাতায়াত করতে পারে। ব্রিজের উপরে একটি বাস উঠলে অপর প্রান্তে আর একটি বাস বা অন্য যানাবাহনকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ব্রিজগুলো আমাদের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিতে হয়।

বালিপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল পিরোজপুর থেকে মোটরসাইকেল যোগে কর্মস্থলে আসেন নিয়মিত। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে যে কোন যানাবহন এই স্টিলের ব্রিজে ব্রেক করলেই অধিকাংশ সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল আরোহীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া ব্রিজের পাটাতন ভাঙা বা ফাঁকা থাকে। যার ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় অনেক।

চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই পথে বিভিন্ন পরিবহনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহনকারী যানবাহন পর্যন্ত এই সড়ক ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মালামাল সরবরাহ করে। কিন্তু বেইলি ব্রিজগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। জরুরি ব্যবস্থা না নিলে যে কোন সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পিরোজপুর সড়ক ও জনপদের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী টি.এম রাজিমুল আলীম রাজু বলেন, আমরা বেইলি ব্রিজ গুলো অপসারণ করে টেকশই ও উন্নত ব্রিজ নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আশা করি আগামী অর্থ বছরেই নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র ছাড় পত্র নেয়া হয়েছে। আর ভেঙে পড়া ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ করতে আরও সাত থেকে আট দিন সময় লাগতে পারে।

Related Articles

Back to top button