পিলারে বেঁধে নির্যাতন, উবাচ মারমার ছয় মাসের কারাদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক: ২০ লাখ টাকার জন্য এক অসহায়কে বেদম মারধর করার দায়ে রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান উবাচ মারমাকে (৫২) ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

গতকাল সোমবার (২৬ মে) দুপুরে রাঙ্গামাটির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসিফ এই রায় দেন।

এই মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে গাইন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পুচিমং মারমা (৪৫), স্থানীয় হেডম্যান উথিন চিং মারমা (৫০) ও স্থানীয় দোকানি সঞ্জয় বণিককে (৪২)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ও রাঙ্গামাটি জজ কোর্টের আইনজীবী মো. শাহ আলম।

তিনি বলেন, রাজস্থলীতে সনাতনী সম্প্রদায়ের সংখ্যাঘু ব্যবসায়ী যীশু সাহাকে (৪৫) গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়েছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা না দিলে তাকে গুম করে করে ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী যীশু সাহা। পরে আজ সোমবার রাঙামাটির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।

দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গেল ৩ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি ইস্যু করে উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা। সেখানে বলা হয় আমার বিরুদ্ধে সঞ্জয় বণিক ও সাজু বণিক নামে দুই ব্যক্তি একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদে একটি জরুরি সভা ডাকা হয়। কিন্তু সেই দিন আমি জরুরি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বিষয়টি তাদের জানানো হয়। এরপর দিন ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা ২০ মিনিটে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভবনের বৈঠকখানায় সবাই মিলে বসি। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া মাত্রই উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমার আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজা করেন। একই নির্দেশ দেন ইউপি চেয়ারম্যান পুচিং মং মারমা ও ২৩২৮ নম্বর মৌজার হেডম্যান উথিন চিং মারমাকে। তারা সবাই মিলে আমাকে পিলারের সঙ্গে বেঁধে বেদমপ্রহার করেন। পরে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। জানানো হয়, এই টাকা না দিলে আমাকে গুম করা হবে। জবর দখল করা হবে আমার ব্যবসা বাণিজ্য।

এ রায়ে অসন্তুষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী জীবন চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উবাচ মারমাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাকি তিনজনকে খালাস দিয়েছেন। এই রায়ে আমরা মোটেও সন্তুষ্ট নই। তাৎক্ষণিক জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন। এই রায়ের বিষয়ে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

Related Articles

Back to top button