তরুণদের নজরুল পাঠে উৎসাহিত করতে হবে

অনলাইন ডেস্ক: নজরুল সংগীতশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে গানের পাশাপাশি লেখালেখি এবং অভিনয়েও দেখা গেছে। বর্তমানে গান নিয়েই তার ব্যস্ততা বেশি। আগামীকাল রবিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী। বিশেষ এ দিন নিয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা নিজের পরিকল্পনা ও নজরুলের গান প্রসঙ্গে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন রিয়েল তন্ময়।

নজরুলের জন্মজয়ন্তীতে কোন বিশেষ অনুষ্ঠান অংশ নিচ্ছেন?

আমি গত কয়েকদিন ধরেই টিভি লাইভ করছি। এছাড়াও স্টেজ শো করছি। এগুলো সবই নজরুলকে নিয়ে আয়োজন। আজকেও গাইবো এক আয়োজনে। বলা যায়, টানা কয়েকদিন ধরেই নজরুলকে নিয়েই অনুষ্ঠান করছি।

বর্তমানে গান নিয়ে আপনার ব্যস্ততা কেমন?

৮নিয়মিত স্টেজ শো ও টিভি লাইভ করছি। এছাড়া কাজী নজরুলের গান ভালোভাবে করতে গেলে টাকা খরচ করতে হয়। সেই খরচ এখন আর কেউই করতে চায় না। তাই স্টেজেই নিয়মিত গান করছি। তবে স্টেজে এখন নতুনদের উপস্থিতি বেশি। সবসময় নতুনদের সঙ্গে গান করতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না, কিছু সিনিয়র শিল্পী থাকলে গান করি।

তরুণদের মধ্যে কিন্তু নজরুলের গান নিয়ে একটি আগ্রহ রয়েছে…

সেটি অবশ্যই সত্যি তাদের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। তারা গাইতে চায়। কিন্তু নজরুলকে নিয়ে চর্চা করা, গবেষণা ও পড়াশোনা করা, এটি তারা করছে না। এখানে তাদের দোষ আমি দিচ্ছি না। তাদের সমস্যা নয় এটা। আসলে সেই পরিবেশটাই তারা পাচ্ছে না। ডিজিটাল সময়ে এসে তারা অন্যান্য সেক্টরেই বেশি সময় কাটাচ্ছে। এছাড়া পাঠ্যবইয়ে ডুবে আছে। এর বাইরে নজরুলকে জানতে ও তার লেখা বুঝতে পাঠ করার জন্য সেই পরিবেশটা ওরা পাচ্ছে না বা সঠিক গাইডলাইন কেউ দিচ্ছে না। তাদের নজরুল পাঠে উৎসাহিতও করা হচ্ছে না।

তরুণ প্রজন্মকে নজরুল পাঠে আগ্রহী করতে করণীয় কী?

সবার আগে প্রয়োজন পরিবেশ। যেটি এ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা পাচ্ছে না। আমাদের সময় আমরা পড়াশোনা করেছি, পাশাপাশি গান, খেলাধুলাও করেছি। আজ আমি একজন শিল্পী হয়েছি। তাই বলে কি আমার পড়ালেখা শেষ হয়ে গেছে? কিন্তু আজকাল এমন একটা পরিস্থিতি হয়েছে পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য কিছুতে সময় দিলেই অভিভাবকরা মনে করছেন পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাবে। এটা মোটেও ঠিক নয়। এ প্রজন্ম কিন্তু গানে আগ্রহী। নজরুলের কঠিন কঠিন গান তারা তুলছে, শিখছে। আমরাই তাদের চাপে রাখছি। ওদের দোষ দেয়া যাবে না। তারা ক্লাসিক্যাল শিখছে। তারা ভালো গানের কদর করতেও শিখেছে। আমি বিভিন্ন সময় বিচারকের কাজ করেছি, তাই বলব ওদের দোষ দেয়া যাবে না। দোষ দেব তাদের যারা সুস্থ সঙ্গীতকে অসুস্থ করে তুলছে। এ প্রজন্মকে সঠিক গাইডলাইন দিচ্ছে না। এখানে সবাইকেই সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে আসতে হবে এ প্রজন্মকে নজরুল পাঠে আগ্রহী করে তুলতে হবে।

জাতীয় কবির গান কি যথাযথভাবে সংরক্ষণ হচ্ছে?

যতখানি সংরক্ষণ হচ্ছে ততখানি তো প্রচার হওয়া দরকার। প্রচার হওয়াটাই সমস্যা হয়ে গেছে এখন। ক্লাসিক্যাল গান অনুষ্ঠানে গাইতে গেলে চিন্তাভাবনা করে গাইতে হয়। শ্রোতা এবং শিল্পী দুই পক্ষ মিলে একটা সমন্বয় ছিল আগে। আগে কে কত সুন্দর গান গাইতে পারে, এ রকম একটা প্রতিযোগিতা ছিল। এখন সেটা অন্যরকমভাবে হচ্ছে।

Related Articles

Back to top button