বিশ্রামে আছেন খালেদা জিয়া

অনলাইন ডেস্ক: দেশে ফেরার পর থেকে বিশ্রামে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের ফলোআপ করছেন চিকিৎসকরা। মঙ্গল ও বুধবার রাতে চিকিৎসকরা গুলশানের বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা রোস্টার করে বাসায় গিয়ে ম্যাডামকে দেখে আসছেন। ম্যাডাম ভালো আছেন। বিশেষ করে মানসিক অবস্থাটা খুবই ভালো আছে। দ্য লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে। তিনি মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন।

লন্ডনে ৪ মাস চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যান। সঙ্গে আসেন তার দুই পুত্রবধূ, ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান। জানা গেছে, দুই পুত্রবধূ গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন। বুধবার জোবাইদা রহমান তার বাবা সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কবর জিয়ারত করেন। খালেদা জিয়াকে দেখতে গত ২ দিন তার পরিবারের লোকজন, নিকটাত্মীয় ও স্বজন ছাড়া তেমন কেউ বাসায় যাননি। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি খোশ মেজাজে সময় কাটান।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, চেয়ারপারসন তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় বিশ্রামে আছেন। তিনি বলেন, ফিরোজার সামনে বা আশপাশে ভিড় না করতে দলের নেতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের পরামর্শে ম্যাডামের চিকিৎসা চলবে। তিনি বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। ম্যাডামকে টানা বসে না থেকে কিছুটা হাঁটাচলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা নিয়ম করে বাসায় ফলোআপ করে যাচ্ছেন। এগুলোর সমন্বয় করছেন ডা. জাহিদ হোসেন। তিনি প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে কল করেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে ম্যাডামের জন্য বাসায় খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন গত ৪ মাস লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ১৭ দিন ক্লিনিকে থাকার পর বিএনপি চেয়ারপারসন ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন।

৭৯ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান। লন্ডন ক্লিনিকে ঝুঁকির কথা চিন্তা করে লিভার প্রতিস্থাপন করেননি চিকিৎসকরা।

তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা : এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাসভবনে ফেরার পথে অভ্যর্থনা জানান লাখো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারেক রহমান। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্য, পুলিশ, র‌্যাবসহ অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা যেভাবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button