কর্মীকে মারধরের অভিযোগে ফারইস্ট ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অনলাইন ডেস্ক: ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলামসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
ভুক্তভোগী মো. শাহাদাৎ হোসেন আকন্দ গত ২৫ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন। সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পাওনা বেতন বিষয়ে জানতে গত ৮ সেপ্টেম্বর ফারইস্ট লাইফের মতিঝিল কার্যালয়ে গেলে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের নির্দেশে একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী তার ওপর হামলা চালায়।
১৩ বছর ফারইস্টে চাকরির পর বর্তমানে প্রাইম ইসলামী লাইফে কর্মরত শাহাদাৎ হোসেন জানান, সহকর্মী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ওইদিন ফারইস্ট টাওয়ারে গেলে তাদের গালাগাল, কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর ১৮ তলার একটি কক্ষে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়।
শাহাদাতের দাবি, আটক অবস্থায় লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে তাদের মারধর করা হয়। এ সময় তার মোবাইল ফোন, ৩০ হাজার টাকা এবং একটি স্বর্ণের আংটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা এবং ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণও দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে তিনি তার চাচা রুহুল আমিন আকন্দকে ফোনে জানালে তিনি শাহবাগ থানায় যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে ২৫ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মো. মুকাদ্দেছ হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. মোবারক হোসেন, পরিচালক মো. হেলাল মিয়া, মো. মোশারফ হোসেন পুস্তি, সিইও মো. কামরুল হাসান, অ্যাডিশনাল সিইও মো. শহিদুল ইসলাম, এএমডি মো. আব্দুর রহিম ভুইয়া, এসভিপি ও সিএফও কে. এম. সামছুদ্দিন, ইভিপি মো. হামিদুর রহমান আজাদ ও মো. মোস্তফা জামান হামিদি, ডেপুটি ভিপি মো. মোজাম্মেল হোসেন, ভিপি (আইন ও রিয়েল এস্টেট বিভাগ) মো. আজগর আলী, ভিপি (আইন বিভাগ) মো. জসিম উদ্দিন, এভিপি ও চেয়ারম্যানের পিএস মো. এ.এস.এম. শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া (রুমন), এক্সিকিউটিভ অফিসার এ.কে.এম. শহিদুল হক, রিসেপশনিস্ট মো. ইউসুফ নবী, নিরাপত্তা প্রহরী মো. সাইদুর রহমান ও সিকিউরিটি ইনচার্জ মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ বিষয়ে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ। আমি এবং আমাদের কোনো পরিচালক ওইদিন অফিসে ছিলাম না। শুধুমাত্র বোর্ড মিটিং ছাড়া আমরা অফিসে যাই না। আমাদের বিরুদ্ধে এই মামলা উদ্দেশ্যমূলক ও ভিত্তিহীন।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। বাদী অভিযোগ দায়ের করার পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।’