মুখ খুলল হামাস, ট্রাম্পের প্রস্তাব ‘বানচাল করে দেবে ফিলিস্তিনিরা’

অনলাইন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জাতিগত নির্মূলের’ ইঙ্গিত নিয়ে মুখ খুললো হামাস। সশস্ত্র সংগঠনের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনা ‘বানচাল করে দেবে’।

গতকাল রোববার (২৬ জানুয়ারি) নাইম বলেন, ট্রাম্প পুনর্গঠনের নামে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটি আপাত উদ্দেশ্য ভালো হলেও কোনো প্রস্তাব বা স্থায়ী সমাধান বয়ে আনবে না।

ট্রাম্পের ধারণাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে হামাস বলছে, এই পরিকল্পনা আমাদের জনগণকে নিজেদের ভূমি ছাড়তে বাধ্য করে এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকে উৎসাহিত করে।

এর আগে শনিবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প গাজাকে পরিষ্কার/খালি করতে চান বলে জানান। তিনি বলেন, আমি চাই মিশর লোকজনকে (গাজার) নিয়ে যাক। আমরা সম্ভবত এখানে ১৫ লাখ মানুষ নিয়ে কথা বলছি। আসুন আমরা ওই পুরো জায়গাটি পরিষ্কার/সাফ করে ফেলি। আপনি জানেন, এটি (গাজা) শেষ হয়ে গেছে।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতাকারী কট্টর ডানপন্থী ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এই ধারনার বেশ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, উন্নত জীবন শুরু করার জন্য তাদের (গাজাবাসী) অন্য জায়গা খুঁজে পেতে ট্রাম্পের পরামর্শটি একটি দুর্দান্ত ধারণা। এই সমাধানের মাধ্যমে কেবল ‘বাক্সের বাইরে চিন্তাই শান্তি ও নিরাপত্তার সমাধান আনতে পারে’।

কাতারের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল-আরিয়ান আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ‘যুদ্ধের খুব শুরুতে’ ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে যতটা সম্ভব ‘জাতিগতভাবে নির্মূল’ করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, এই পরিকল্পনাটি একাধিক কারণে ব্যর্থ হয়েছিল। যার মধ্যে একটি হল, আরব নেতারা সেই সময়ে অতিরিক্ত ফিলিস্তিনি শরণার্থী জনসংখ্যা নিতে অস্বীকার করেছিলেন।

আল-আরিয়ান আরও বলেন, ফিলিস্তিনিরা নিজেরাই ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবে আগ্রহী হবে না। তারা খুব ভালো করেই জানে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার অর্থ কী এবং গত ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অবস্থা কেমন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে ‘গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত হবে না’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের কারণে গাজার বেশিরভাগ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ বলছে, এই অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সংকট হামাস

Related Articles

Back to top button