বাণিজ্যমেলায় জুলাই চত্বর দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ২৯তম আসর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ পূর্বাচলে এবার সেজেছে অন্যরূপে। স্থাপিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ সম্পর্কিত জুলাই চত্বর দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়েছে। পাশাপাশি ৩৬ জুলাই ও তারুণ্যের বাংলাদেশে (ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন) তরুণ-তরুণীরা পরিদর্শন করছেন। নতুন বাংলাদেশের অর্জিত শ্রদ্ধা জানাতে মেলায় জুলাই ও ছত্রিশ নামে দুটি চত্বর তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও এখানে স্থান পেয়েছে তারুণ্যের বাংলাদেশ। ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার যে বিপ্লব তা ধরে রাখতেই এবারের বাণিজ্যমেলায় রাখা হয়েছে জুলাই ও ৩৬ নামে দুটি চত্বর। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে মসনদ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাণিজ্যমেলায় প্রবেশ করে ডান দিকেই জুলাই চত্বর। প্রবেশ ফটকের ভেতরে পূর্বের দিকেই এগিয়ে গেলেই প্রথমে চোখে পড়বে জুলাই চত্বরের এ গ্যালারি। এখানে শহিদদের ও আন্দোলনে নেতৃত্বদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে এ গ্যালারি সাজানো হয়েছে। এই গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে ১ জুলাই থেকে ৩৬ জুলাইয়ের দিন, ক্ষণ ও ঘটনা সংবলিত ছবি-লেখা।

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার বিপ্লব স্মরণে জুলাই চত্বর ও ৩৬ চত্বরে তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থীদের ভিড়। গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ আবু সাঈদ, ফারহান ফাইয়াজ, মীর মুগ্ধসহ শহিদদের নাম ও ছবি এখানে স্থান পেয়েছে। এছাড়া মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা জুলাই চত্বরের গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মশিউর রহমান তারেক বলেন, মেলায় এলে জুলাই চত্বর ও ৩৬ চত্বরে একবার হলেও সবার আসা উচিত।

শিক্ষার্থী নওরীন জান্নাত বলেন, যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের তো আর পাব না। কিন্তু তাদের ছবির সঙ্গে নিজের ছবিগুলো স্মৃতি করে রাখতে এসেছি। আমরা তরুণ সমাজ চাইলে পুরো দেশটাকেই বদলে দিতে পারি।

মেলায় যমুনার প্যাভিলিয়নে ক্রেতার ভিড় : রোববার বাণিজ্যমেলায় যমুনার প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইল লিমিটেডের ম্যানেজার রাজিব সাহা বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মেলায় আমরা উন্নতমানের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে উল্লে­খযোগ্য হলো- রাইসকুকার, মাইক্রোওভেন, ইলেক্ট্রনিক ওভেন, গ্যাস বার্নার, কারিকুকার, ইনফারেন্সকুকার, রুমহিটার, ভেন্ডার, মিকসারভেন্ডার ও জুসার। এসব গৃহস্থালি পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া যমুনা ইলেকট্রনিক্সের রেফ্রিজারেটর (ডাবল ডোর ও সিঙ্গেল ডোর) বিশেষ মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। স্মার্ট টিভি ও গুগল টিভি, মোটরসাইকেলসহ সব পণ্য যমুনার নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে তৈরির কারণে সহজে ও কম দামে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি আমরা। এবারের মেলায় বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে পেগাসাস ইভো ১৫০ সিসি, পেগাসাস জিউস ১৫০ সিসি, পেগাসাস ফ্যাবিও ১২৫ সিসি। বিক্রিতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া সঙ্গে থাকছে হোম ডেলিভারিতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা।

নরসিংদী থেকে মেলায় আসা গৃহবধূ শাহনাজ বেগম বলেন, যমুনার গৃহস্থালি পণ্য সব সময়ই কেনা হয়। এগুলো খুবই টেকসই ও মজবুত। তবে বিদেশি পণ্যের দাম নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।

কালীগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষক আলো বেগম বলেন, ‘যমুনার হোম অ্যাপ্লায়েন্সের মধ্যে মাইক্রোওভেন কিনেছি। বাজারে অনেক ওভেন আছে, তার মধ্যে যমুনার ওভেনই সেরা বলে মনে হলো। ছাড়ে দামেও সস্তা। আমি একটি ফ্রিজও বুকিং দিয়েছি।’

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিন ১০টা পর্যন্ত চলবে। মেলাতে বড়দের টিকিট মূল্য ৫০ টাকা ও ছোটদের ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বাণিজ্যমেলায় অনলাইন টিকেটিংসহ বেশকিছু নতুন বিষয় রয়েছে। প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রবেশ ফ্রি। প্রবেশপথে কোনো ভিড় নেই। ক্রেতা-দর্শনার্থীরা নির্বিঘেœ মেলায় প্রবেশ করছেন।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা জুলাই চত্বর

Related Articles

Back to top button