মায়ের কোল থেকে ছিটকে ট্রেনের নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক: বাগেরহাটের মোংলায় ট্রেন আসতে দেখে বাস থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে মায়ের কোল থেকে ছিটকে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে মরিয়ম (৩) নামে এক শিশুর নিহত হয়েছে। ওই পয়েন্টের গেইটম্যান সময়মতো রেলগেইট না ফেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা।

গতকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) মোংলা-খুলনা রেললাইনের দিগরাজ বাজার পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ট্রেনটি চলে গেলে শিশুটিকে উদ্ধার করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। হাসপাতালে নেয়ার পূর্বেই শিশুটি মারা যান বলে জানিয়েছেন বন্দর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. শামীম হাসান।

নিহত শিশুর মা ফাতেমা বেগম জানান, দুই সন্তানকে নিয়ে মোংলা থেকে যাত্রীবাহী বাসে করে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন তিনি। পথিমধ্যে দিগরাজের রেলক্রসিংয়ে বাসটি পৌঁছালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মোংলা কমিউটার নামক ট্রেনটি দ্রুত গতিতে রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। এ সময় যাত্রীবাহী বাস থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে তার কোল থেকে শিশু মরিয়ম ছিটকে ট্রেনের নিচে পড়ে।

এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই দায়িত্বে অবহেলার কারণে দিগরাজের রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বে থাকা গেইটম্যান মো শাহিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ সময় মোংলা-খুলনা মহাসড়কে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে সড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়। ঘটনার পর থেকেই গেইটম্যান শাহীন পলাতক রয়েছেন। তার বাড়ি নাটোর জেলায় বলে জানা গেছে।

মোংলা রেল স্টেশনের টিকিট মাস্টার মো. শরিফুর রহমান জানান, গেইটম্যান কেনো ছিল না, এ জন্য গেইটম্যানকে অলরেডি বুক আপ করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। নিহত শিশুর পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, গত বছরে মোংলা-খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মোংলা শহরের মধ্যে একটি মাত্র গেইট। দায়িত্ব অবহেলার কারণে গেইটম্যান মো. শাহিনের বিরুদ্ধে রেল পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং এ ঘটনায় মামলার গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

গত বছর ২০২৪ সালে ১ জুন মোংলা-খুলনা ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গেইটম্যানের অবহেলার কারণেই এই প্রথম এক শিশুর প্রাণ ঝরল মোংলা-খুলনা এই রেললাইনে।

Related Articles

Back to top button