তদন্তে গিয়ে বিএনপি নেতার মারধরের শিকার পুলিশ কর্মকর্তা

অনলাইন ডেস্ক: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় আসিফ নামের একজনের ছিনতাইয়ের লিখিত অভিযোগ তদন্তে গিয়ে পুলিশের এক এসআই, অভিযোগকারী ও তার আত্মীয়রা বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভাঙ্গুড়া স্মৃতিসৌধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা ভাঙ্গুড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সালাম নুরু, ছাত্রদল কর্মী অভিযুক্ত জাহিদ ও তার সহযোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শাহজাদপুর উপজেলার দড়িয়াপুর এলাকার বাসিন্দা আসিফ ভাঙ্গুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ভাঙ্গুড়ার ছাত্রদল কর্মী জাহিদ গলায় চাকু ঠেকিয়ে তার কাছ থেকে ৩ হাজার ৪শ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছে। আসিফ ভাঙ্গুড়া উপজেলার একটি আইটি ফার্মে ফ্রিল্যান্সিং শিখতেন।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আসিফের কয়েকজন আত্মীয় অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে ভাঙ্গুড়া থানায় আসেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রত কুমার অভিযুক্ত জাহিদকে মোবাইল ফোনে ডেকে পাঠান।

জাহিদ উপজেলার স্মৃতিসৌধ এলাকায় পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সালাম নুরু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হুমায়ুন কবির, কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক বায়েজিদ, সদস্য সচিব ডাবলু, জীম, সজলসহ কয়েকজন ছাত্রদল কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। সুব্রত কুমার জাহিদের কাছে ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা নুরু উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে আসিফের আত্মীয়দের মারধর শুরু করে তারা। সুব্রত কুমার বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয় এবং হিন্দু পরিচয় তুলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ বলে তাকেও মারধোর শুরু করে।

ঘটনা জানতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভাঙ্গুড়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল করিমের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মারধরে আসিফের আত্মীয় শাকিল গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানেও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে থানার দ্বিতীয় তলায় উভয়পক্ষকে নিয়ে আপস-মীমাংসা বৈঠক হয়। সেখানে মোবাইল ও টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বলেন, অভিযোগের তদন্তে অভিযুক্ত জাহিদকে ডেকে আনলে বিএনপি নেতা নুরু ও তার সহযোগীরা আমাকে গালিগালাজ করে এবং অভিযোগকারীদের মারধর করে। আমি বাধা দিতে গেলে আমার ওপরও হামলা চালানো হয়।

বিএনপি নেতা নুরু বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা সুব্রত জাহিদকে থানায় না নিয়ে স্মৃতিসৌধ এলাকায় অন্য উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিলেন। আমি কাউকে মারধর করিনি। কিছু ছোট ছেলেরা মারধর করেছে, যাদের আমি চিনি না।

অভিযোগকারী আসিফের ভাই রাহুল বলেন, আমার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা ভাঙ্গুড়া থানায় আসি। কিন্তু তারা পুলিশের উপস্থিতিতে পুলিশ ও আমাদের মারধর করে।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Back to top button